নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে গিয়ে যখন হিমসিম খাচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ তখন দেশ দুটির দিকে এগিয়ে আসছে আরেকটি ভয়ঙ্কর বিপদ। যে কোনও সময় দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ দুটির ওপর হামলে পড়তে পারে পঙ্গপালের দল। এই খবর জানিয়েছে ভারতের ইংরেজি ভাষার সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দু।
এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি জানাচ্ছে, ভারতের দিকে এগিয়ে আসছে ভয়ঙ্কর এই পতঙ্গের ঝাঁকটি। ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে সরাসরি ভারত উপদ্বীপের কৃষিজমির ওপর নেমে পড়বে এই পঙ্গপাল। এরপরই তারা ছুটবে বাংলাদেশের দিকে।
পত্রিকাটির আশঙ্কা, এই গ্রীষ্মকালেই সে দেশের কৃষি জমিগুলোতে হামলে পড়তে পারে পঙ্গপাল। ফলে দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত সরকার। একটি হচ্ছে চলমান করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আর অন্যটি হচ্ছে পঙ্গপালকে প্রতিরোধ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
একটি সরকারি সূত্র জানায়, হর্ন অব আফ্রিকা থেকে একদল পঙ্গপাল গতিপথে মরু অঞ্চলের আরেকদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এগিয়ে আসছে। এদের একটি ঝাঁক ইয়েমেন, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, ইরান, সৌদি আরব এবং পাকিস্তান হয়ে ভারতে হানা দিবে। এরা ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ আরো কয়েকটি এলাকা দিয়ে ঢুকছে।
আরেক দল ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে সরাসরি ভারত উপদ্বীপের কৃষিজমিতে নেমে পড়তে পারে। এরপরই এরা এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের দিকে। দুই দল পঙ্গপালের সম্মিলিত হামলায় ভারত খাদ্য সঙ্কটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির নীতি নির্ধারকরা।
গত ২১ এপ্রিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মরুর পঙ্গপাল যারা এ বসন্তে পূর্ব আফ্রিকা, ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইরানে হানা দিয়েছে। আফ্রো-এশীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও তারা বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও পঙ্গপালের হামলার আশঙ্কা করা হয়েছে।
পঙ্গপাল বাতাসের উষ্ণতার গতি অনুযায়ী চলাফেরা করে এবং এক জায়গার খাবার ফুরালেই নতুন জায়গার খোঁজ করে। সে কারণে কৃষি অধিদপ্তরের আশঙ্কা বাংলাদেশেও হানা দিতে পারে পঙ্গপালের দলটি।
প্রসঙ্গত, পঙ্গপাল হচ্ছে এক জাতের ঘাসফড়িং। ইংরেজিতে যাদের বলে লোকাস্ট। স্বভাবে কিছুটা লাজুক প্রকৃতির এই পতঙ্গ ইঞ্চি খানেক লম্বা হয়ে থাকে। খাবারের খোঁজে এরা ঝাঁকে বেঁধে বেড়ায়। সাধারণত একেকটা ঝাঁকে কয়েক লাখ থেকে এক হাজার কোটি পতঙ্গ থাকতে পারে। এই বিশাল পতঙ্কের ঝাঁকটি পঙ্গপাল হিসাবে পরিচিত। সাধারণতঃ একটি পূর্ণ বয়স্ক পঙ্গপাল প্রতিদিন তার ওজনের সমপরিমাণ খাদ্য খেয়ে থাকে। যে অঞ্চলে তারা আক্রমণ করে, সেখানে খাদ্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা অন্য অঞ্চলে যায় না।
এসব পঙ্গপালের হামলায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে দুর্ভিক্ষ বা আকালের ঘটনাও ঘটেছে। তাই মানব ইতিহাসে সাক্ষাৎ এক আতঙ্কের নাম পঙ্গপাল।
সূত্র: দ্য হিন্দু