নিউজ ডেস্ক: নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গৃহশিক্ষকসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার খলিল মিয়ার ছেলে গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি (২০), একই এলাকার অজি উল্লার ছেলে মো. সাঈদ (২০) ও ইসরাফিল আলম (১৪)।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আবদুর রহিম রনির প্রাইভেট থেকে কিছুদিন আগে পড়া বন্ধ করে দিয়ে অন্যত্র প্রাইভেট পড়া শুরু করে অদিতা। এতে ক্ষিপ্ত হয় রনি, যদিও পরে অদিতাদের বাসায় বিভিন্ন সময় আসা যাওয়া করতো সে। অদিতার মা ঘরে না থাকার সুযোগ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে কোন একসময় বাসায় গিয়ে অদিতাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও পরে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঘরে থাকা ছোরা দিয়ে হাত ও গলা কেটে অদিতাকে হত্যা করে। ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য ঘরে আলমারিতে থাকা মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। কিন্তু কোন মূল্যবান জিনিস খোয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের একাধিক দল পৃথক অভিযান চালিয়ে ইসরাফিল, তার ভাই সাঈদ ও আবদুর রহিম রনিকে গ্রেপ্তার করে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সে প্রাথমিকভাবে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, রনির মাথা, ঘাড়, গলাসহ শরীরের একাধিক স্থানে নখের আঁচড় রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবদুর রহিম রনি ও ইসরাফিল আলমকে আসামি হিসেবে ও সাঈদকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের গাড়িতে তোলার সময় বিক্ষুব্ধরা রনির ওপর হামলা চালায়। এসময় বিক্ষুদ্ধরা তাকে জুতাপেটা করে। এদিকে খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মুজিব চত্বরে সচেতন নোয়াখালীবাসীর ব্যানারে শত শত তরুণ, বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর লক্ষীনারায়ণপুরের নিজ বাসায় তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) গলা ও হাতের রগ কেটে হত্যা করা হয়। রাত ৯টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত অদিতা নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন এবং নোয়াখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষীনারায়ণপুর মহল্লার আবুল খায়ের পেশকার বাড়ির মৃত রিয়াজ হোসেনের মেয়ে। তার মা স্থানীয় একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।