1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

গুম-খুন জিয়াউর রহমানের সময় শুরু হয়েছিলো: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২

নিউজ ডেস্ক: গুম-খুন জিয়াউর রহমানের সময়ে শুরু হয়েছিলো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে গুম-খুনের কথা বলে, গুম-খুন তো এ দেশে সৃষ্টি করেছে জিয়াউর রহমান। আমাদের মহানগর ছাত্রলীগের মফিজ বাবুকে যে তুলে নিয়ে গেল, কই তার লাশ তো এখনও তার পরিবার পায়নি। ঠিক এভাবে সারা বাংলাদেশে আমাদের অনেক নেতাদেরকে হত্যা করেছে।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আসামিকে কে কবে বিদেশে পাঠায় চিকিৎসার জন্য? তাহলে তো কারাগারে কোনো আসামি তো আর বাদ থাকবে না। তাহলে তারা বলবে আমাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। আমরা কি সবাইকে বিদেশে পাঠাবো?’

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি বলেই তো এত বাধা বিপত্তি। বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, রেলগাড়ি কিনলাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিলো, বাস জ্বালিয়ে দিলো। জীবন্ত মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে…মানবতার কথা বলে…যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে, তাদের মুখ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয়, মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়।’

‘যারা সাধারণ মানুষকে বেঁচে থাকার অধিকার দেয়নি। আজকে সেসব মানুষ আগুনে পোড়ে পঙ্গু হয়ে আছে। জীবনে কাজ করে খেতে পারেন না। আমি আমার সাধ্যমতো সেইসব মানুষকে তাদের পরিবারকে সাহায্য করে যাচ্ছি। এই অবস্থা সৃষ্টি করেছিলো তারা। ২০১৪ থেকে একটার পর একটা ঘটনা তার ঘটিয়েছে। এখনো করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ…তাকে বিদেশে পাঠাও, আল্লাদের আর শেষ নেই। পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে. এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেলে ছিলো। অন্তত আমি এটুকু দয়া করেছি যে ঠিক আছে, বয়োবৃদ্ধ মানুষ বা অসুস্থ, হাঁটতে চলতে উঠতে বসতে অসুবিধা, একজন না ধরলে উঠতে পারে না। জেলখানায় যখন এই অবস্থা দেখেছি তখন বলেছি, ঠিক আছে যেটুকু আমার ক্ষমতা আছে সেই নির্বাহী ক্ষমতায় তাকে তার বাসায় থাকার সুযোগটা করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে বলে কোন মুখে। জিয়াউর রহমান খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের ক্ষমা করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলো। এরশাদ এসে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দিলো। রাষ্ট্রপতির পদপ্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিলো। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে আরও একধাপ…৯৬ সালে আমরা সরকারে এসে সেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে দেই। আমরা খুনিদের বিচার কাজ শুরু করি। ৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারক গোলাম রসুল সাহেব তিনি রায় দেবেন..তিনি যাতে কোর্টে যেতে না পারেন সেজন্য খালেদা জিয়া হরতাল ডাকলো ওইদিন। যাতে জজ সাহেব কোর্টে যেতে না পারেন খুনিদের রায়টা দিতে না পারেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। কোর্টে গেছেন রায় দিয়েছেন। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ক্ষমতায় আসতে পারিনি। ভারত গ্যাস কিনবে। আমি গ্যাস বিক্রি করবো না। আমেরিকার কোম্পানি গ্যাস বেঁচবে। আমি বলে দিলাম আমি তো আমার দেশের গ্যাস বিক্রি করবো না। চক্রান্ত করা হলো। কারা কারা চক্রান্তে ছিলো আমি জানি। আমরা আসতে পারলাম না ক্ষমতায়।

‘খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সেই খুনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি এমনকি ১৩ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের রায় দেবে, সেই আসামিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়ে তাকে প্রমোশন দিয়েছে। একজনকে প্রমোশন দিয়েছে, আরেকজনকে প্রমোশন দিয়ে রাষ্ট্রদূত বানিয়ে আরেক দেশে পাঠিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা মনে আছে, সেদিন ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলো খালেদা জিয়া। সেই নির্বাচনে কর্নেল রশিদ, ফারুক আর হুদা প্রার্থী। ফারুককে জেতাতে পারেনি। কিন্তু রশিদ হুদাকে জিতিয়ে সংসদে বসালো এই খালেদা জিয়া। যারা আমার আবার হত্যাকারী, মায়ের হত্যাকারী। তাদেরকে সে সংসদে নিয়ে বসিয়েছে। খালেদা জিয়ার ছেলে মারা গেলো কোকো। শতহলেও মা তো, তাই এতকিছু স্বত্ত্বেও…আর আমাকে তো হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বারবার। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে খালেদা জিয়া বক্তব্য দিলো, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধীদলীয় নেতাও কোনদিন হতে পারবে না।’ তো আল্লাহপাক ডাক শুনেছেন তিনি এখন কিছুই হতে পারেননি। কোটালিপাড়ায় যেদিন বোমা পুতে রাখবে তখন খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছিলো, ‘আওয়ামী লীগ শতবছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না।’ এদেশের যতো বোমাবাজি তার পেছনে যে এদের হাত আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমি এই কথা জিজ্ঞেসা করবো একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো সেই বিচারটা হতে দেয়নি..যতগুলো আলামত ছিলো নষ্ট করেছে। জজ মিয়া নাটক সৃষ্টি করেছে। যে এসব ঘটনা ঘটলো তার জন্য আমাদের কাছে এত করুনা দয়া চায় কিভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন।

‘যারা বারবার আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে, তারপরও তো আমরা করেছি করুনা। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো যখন মারা গেলো তখন সময় নির্দিষ্ট করে আমি গেছি। আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে আমাকে ঢুকতে দেয়নি। আমার গাড়ি থামার সাথে সাথে গেট বন্ধ। তারপরেও তার জন্য দয়া দেখাতে হবে! দয়া তো দেখিয়েছি, আর কতো দয়া দেখাবো। যে আমাকে খুন করতে চেয়েছে, যে আমার বাব-মা, ভাই-বোনদের হত্যার সঙ্গে জড়িত তার জন্য যথেষ্ট দয়া দেখানো হয়েছে।”

তিনি বলেন, আমার হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে পঙ্গু করেছে, নির্যাতন করেছে দিনের পর দিন, তার জন্য অনেক দয়া দেখানো হয়েছে। এখন তারা নতুন নাটক সাজাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, হলুদ শাড়ি পড়ে উনি হাসপাতালে গেলেন, এখন বলছে খুবই খারাপ অবস্থা বিদেশে না গেলে নাকি চিকিৎসা হবে না। এভারকেয়ার তো চমৎকার চিকিৎসা করেছে। সব থেকে আধুনিক ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা তাকে দিচ্ছে। আসামিকে কে কবে বিদেশে পাঠায় চিকিৎসার জন্য? তাহলে তো কারাগারে কোনো আসামি তো আর বাদ থাকবে না। তাহলে তারা বলবে আমাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। আমরা কি সবাইকে বিদেশে পাঠাবো?

এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এই সুযোগ তারা নিচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের তার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। আমরা সংঘাত চাই না। জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি।’

এক কোটি মানুষকে ৩০ টাকা কেজি করে চাল দেবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের ১৮ লক্ষ মেট্রিকটন চাল মজুত আছে। টিসিবি কার্ডধারীরা কমমূল্যে পণ্য নিতে পারবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা। ইতিমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়ছি সেখানে বন্যায় কি লাগবে…সেখানে বাচ্চারা খুব কষ্টে আছে। আমরা তাদের জন্য খাবার ও কি কি দেওয়া যেতে পারবে সেটা ঠিক করতে বলেছি। আমার সেখানে রিলিফ পাঠাবো। আমরা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি সেই হিসেবে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে। জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছে। আর্তমানবতার সেবায় আমরা আছি।

সারা বিশ্ব দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক টুকরো জমিও যাতে অনাবাদী না থাকে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির আমলে ঢাকা শহরের কি অবস্থা ছিলো? ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। বিদ্যুৎ পানির জন্য হাহাকার। বিদ্যুৎ দিতে পারে না। কানসাটে গুলি করে মেরেছে। সারের আন্দোলনে কৃষককে গুলি করে মেরেছে। রোজার দিনে গুলি করে শ্রমিক মেরেছে। তারা হত্যা করেই মানুষের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলো।

তিনি বলেন, ৯৬ থেকে ২০০১ যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিলাম, সেটি বিএনপি ক্ষমতায় এসে আরও কমিয়ে দিলো। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা ওয়াদা করেছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেবো। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys