1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন

ভুয়া নাম-ঠিকানায় ভর্তি করে কিশোরীর সিজার, নবজাতক উধাও

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২

নিউজ ডেস্ক: জন্মের পরপরই এক কিশোরী মায়ের নবজাতক ছেলে সন্তান পাঁচ দিন ধরে গায়েব। কেউ বলছেন চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আসলে কি ঘটনা ঘটেছে তা কেউই পরিষ্কার করে বলছেন না।

জেলার বোদা উপজেলার নিরাময় নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনাটি ঘটেছে। পাঁচ দিন ধরে ওই কিশোরী মা সন্তানকে ছাড়াই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ক্লিনিকে শিশু মৃত্যু, অবৈধ গর্ভপাত ঘটানো ও শিশু বিক্রি চক্রের সদস্যরা ক্লিনিক মালিককে ম্যানেজ করে এমন ঘটনা এর আগেও ঘটিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

সোমবার বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ক্লিনিক থেকে শিশু উধাও হওয়ার খবর পেয়েছি। সাংবাদিকরাও বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। ক্লিনিকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ক্লিনিক মালিক ও কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নবজাতক উদ্ধারসহ প্রকৃত কারণ না জানিয়ে কিশোরীকে ছাড়পত্র না দিতে ক্লিনিক মালিককে বলে দেয়া হয়েছে।

নবজাতক উধাও হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে বোদা থানা-পুলিশের একটি দল রবিবার মধ্যরাতে ক্লিনিকে গিয়ে ক্লিনিক মালিক ও ওই কিশোরী মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে কি তথ্য পেলেন না জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন বোদা থানার উপপরিদর্শক আব্দুল কুদ্দুস।

পুলিশ, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানান, গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে ওই ক্লিনিকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী এক কিশোরীর সিজারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। বয়সের ভুল তথ্য, ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ওই কিশোরীর সিজার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গত ৫ দিনেও ওই কিশোরীর স্বামী ক্লিনিকে আসেননি। খোঁজ নিয়ে বাবা-মাকেও ক্লিনিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মনোয়ারা নামে কথিত এক খালা কিশোরীকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করান। ক্লিনিকে ভর্তির এক ঘণ্টা পর কিশোরীকে সিজার করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. আনোয়ার আলী ও ডা. উত্তম কুমার পাণ্ডে সিজার অপারেশন পরিচালনা করেন। সিজারের পর পরই ওই শিশুটিকে চিকিৎসার কথা বলে ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে যান ওই কথিত খালা। এরপর থেকে ওই নবজাতক নিখোঁজ রয়েছে। পরে অভিযোগ পাওয়া যায়, নবজাতককে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নীলফামারীর জনৈক নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

ওই কিশোরীর বাবা-মা জামালপুরের মাদারগঞ্জ এলাকায় থাকেন। ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে কেন সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নেই এমন একটি ক্লিনিকে ওই কিশোরীর সিজার করা হয়েছে এমন নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে স্থানীয়দের। পরে তারা বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন।

নবজাতক উধাও হয়ে যাওয়াসহ প্রকৃত ঘটনা জানতে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্লিনিকে হাজির হয়ে ওই কিশোরী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ক্লিনিকের মালিক উজ্জ্বল সরকার সাংবাদিকদের বাঁধা প্রদান করেন।

সাংবাদিকেরা ঘটনাটি বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরীকে অবহিত করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার পর সাংবাদিকরা ওই কিশোরীর সাথে কথা বলেন।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ওই কিশোরী তার স্বামীর নাম স্মরন বলে জানালেও ক্লিনিকের কাগজপত্রে তার স্বামীর নাম মো. আমিরুল ইসলাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাবা-মা জামালপুরে মাদারগঞ্জ এলাকায় থাকলেও তার বাড়ির ঠিকানা লেখা রয়েছে তিতো পাড়া। ক্লিনিকের কাগজপত্রে সাক্ষী হয়েছেন মনোয়ারা নামে এক নারী।

ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরী সাংবাদিকদের জানান, তার অজান্তেই ক্লিনিকে ভর্তির সময় স্বামী ও ঠিকানা ভুল লিখে দেওয়া হয়েছিল। কান্না জড়িত কণ্ঠে ওই কিশোরী জানান ক্লিনিকে তার পাশে কেউ নেই। ৫ দিন ধরে সন্তানকে দেখতে পাননি। দূরসম্পর্কের মনোয়ারা খালা তার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন বলে কিশোরীর ধারণা।

ক্লিনিকের মালিক উজ্জ্বল সরকার জানান, নবজাতকটিকে চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে যান ওই কিশোরীর খালা। পরে শুনেছেন যে নবজাতকটিকে বিক্রি করা হয়েছে। আমরা শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। ক্লিনিকের এক কর্মচারী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নীলফামারী গেছেন। শিশুটিকে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কেন অবৈধভাবে সিজার করালেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার নিকটাত্মীয়রা তাকে ভর্তি করেছে। সেখানে তারা যে বয়স ও ঠিকানা দিয়েছিল তাই উল্লেখ করা হয়েছে। রোগীর গাইনি সমস্যা থাকায় দ্রুত সিজার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ঘটনা কি তা আমার জানার প্রয়োজন নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys