1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ন

দূষিত পানিতে বাগেরহাটে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডায়রিয়া রোগী

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১

বাগেরহাট: দূষিত পানি পান করায় বাগেরহাটে আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়া রোগী। হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় রোগী ও রোগীর স্বজনরাও বাধ্য হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন মেঝেতে। সরকারি হাসপাতালে স্যালাইনসহ অন্যান্য ঔষধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে বিশুদ্ধ পানির সংকটে প্রতিনিয়ত পানিবাহীত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশুদ্ধ পানির সংস্থান হলে কিছুদিনের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে আসবে।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ৪ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা যায়, বারান্দার মেঝেতে রয়েছেন ৪-৫জন রোগী। ভিতরে চারটি শয্যা ও মেঝেতে মিলে রয়েছে অন্ত ১৮-২০ জন রোগী।

 

গত এক সপ্তাহে চার শয্যার এই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশু মিলে অন্তত দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।শুধু বাগেরহাট সদর হাসপাতাল-ই নয় জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জসহ ৯টি উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একই অবস্থা। বাদ যায়নি বেসরকারি ক্লিনিকও।বেসরকারি ক্লিনিকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন একটু স্বচ্ছল রোগীরা। সব গত এক সপ্তাহে বাগেরহাট জেলায় অন্তত ২ হাজার মানুষ ডায়রিয়া আক্রন্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার বেশি হওয়ায় স্যালাইন ও শয্যা সংকটে সঠিক চিকিৎসা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ একটি আইভি স্যালাইন ও দুইটি ট্যাবলেট ছাড়া রোগীর সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সকল ওষুধ কিনতে হচ্ছে তাদের।ডায়রিয়া আক্রান্ত স্বামী-শ্বশুর, এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে থাকা গৃহবধু মুনিরা বেগম বলেন, হঠাৎ করে বাড়ির চারজনের পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়। দুই দিনে না কমায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।ছোট ছেলের জন্য একটি বেড পেলেও, স্বামী, শ্বশুর ও মেয়েকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী মেহেদী হাসানের চাচা সাইফুজ্জামান জানান,প্রথমে বমি, তারপরে পাতলা পায়খানা শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি করি। তিন দিন হলো হাসপাতালে রয়েছি। এখানে একটি স্যালাইন ও দুইটি ট্যাবলেট ছাড়া সব ওষুধ-ই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। প্রায় তিন হাজার টাকার ওষুধ কিনেছি। এখানের পরিবেশও তেমন ভালো না। গরীব রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার কালিকাবাড়ি থেকে চুমকি বেগম বলেন, টিউবওয়েলের পানি পান করে ডায়রিয়া হয়েছে। মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে দুইদিন ভর্তি ছিলাম। সেখানে থেকে ভাল না হওয়ায় এখানে পাঠিয়েছে।

কচুয়ার গজালিয়া থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত রেহেনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত বুধবার। একটি স্যালাইন হাসপাতাল থেকে তার শরীরে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো পাচটি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। এখন মোটামুটি সুস্থ। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে স্যালাইন কিনেছি। কি করবো জীবন তো বাচাতে হবে। এমনটাই জানিয়েছেন রোগীর বোন সেলিনা বেগম।কচুয়া উপজেলার গজালিয়া থেকে আসা রোগীর স্বজন মোঃ কামাল বেপারী ও আকবর রহমান জানান একই ধরণের অবস্থা।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃ মিরাজুল করিম বলেন, সুপেয় পানির অভাবে দূষিত পানি পান এবং প্রচন্ড গরমে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে।আমাদের হাসপাতালের চারটি বেডের অনুকূলে প্রতিদিন বিশ থেকে পচিশ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে।রোগীর চাপের কারনে স্যালাইনের সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। আমরাও রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। গত এক সপ্তাহে দুই শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু রোগীদের চিকিতসা সেবা দিয়েছি। এখনো অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, উপকূলীয় জেলার অধিকাংশ এলাকার পানি লবণাক্ত। এরপরেও অনাবৃষ্টি ও নদীর পানি কমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির নিরাপদ স্থান পুকুরে পানি নেই। যার ফলে স্থানীয়রা যে যার মত পানি পান করছে। এই কারণে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত পানিবাহীত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আশা করি বৃষ্টি হলে ও বিশুদ্ধ পানি পেলে ডায়রিয়া রোগ থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys