1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

৩৪ সেকেন্ডেই ক্ষতস্থানে রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে সাপের বিষ থেকে তৈরি আঠায়!

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১

নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার ল‌্যানসেড স্নেক, বৈজ্ঞানিক নাম বোথ্রপস এট্রকস। এক ছোবলে মৃত্যু প্রায় অবশ্যম্ভাবী। অথচ এই ভয়ঙ্কর সরীসৃপের বিষকে ব‌্যবহার করেই তৈরি করা হয়েছে এক জৈব আঠা, ক্ষতস্থানজুড়ে রক্তপাত বন্ধ করতে যা সময় নেয় মাত্র ৩৪ সেকেন্ড। ইঁদুরের কাটা লেজে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে।

অন্যদিকে, লিভারের দুটো অংশ জুড়তে সময় নিয়েছে সব মিলিয়ে ৪৫ সেকেন্ড, মানে এক মিনিটেরও কম। তবে শুধু ক্ষতস্থানে বা কেটে যাওয়া অংশে আঠা দিলেই হবে না, ক্ষতস্থানে জোরালো আলোও ফেলতে হবে। আলোর সঙ্গে মিশে কাজ করবে এই ‘সুপার গ্লু’। মশারির মতো জালিকা বানিয়ে রক্তপাতও বন্ধ করবে।

বর্তমানে অস্ত্রোপচারের সময় সার্জনরা যে আঠা ব‌্যবহার করেন, তা রক্তপাত ঠেকাতে পাঁচ থেকে ছ’মিনিট সময় নেয়। ‘সুপার গ্লু’ সে কাজই করবে মাত্র ৩৪ থেকে ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে। এই মহৌষধের সন্ধান পেয়ে চিকিৎসকমহল স্বাভাবিকভাবেই আশাবাদী।

বর্তমানে চালু বিভিন্ন ‘গ্লু’ নিয়ে অন‌্য সমস‌্যাও রয়েছে। এগুলো মূলত পলিইথিলিন গ্লাইকল এবং সায়ানো এক্রিলেটসের মতো কৃত্রিম রাসায়নিক দিয়ে তৈরি। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, তাই বেশি প্রয়োগের উপায় নেই। অনেক সময় প্রয়োগস্থানে প্রবল জ্বালা-যন্ত্রণাও হয়। আবার প্রাকৃতিক অন্যান্য আঠার কার্যকারিতা নিয়ে বিবিধ প্রশ্ন রয়েছে। বেশি রক্তপাত ঠেকানোর ক্ষমতা সেগুলোর নেই। এমতাবস্থায় নিরাপদ ও কার্যকরী একটি জৈব আঠার সন্ধানে ল্যাবরেটরিতে দিন-রাত এক করছিলেন কানাডা ও চীনের একদল বিজ্ঞানী। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল মিলেছে, ল‌্যানসেড সাপের বিষের মধ্যে হদিস মিলেছে ব‌্যাকট্রোসোবিন বা রেপটিলেজ এনজাইমের, যে উৎসেচকটি রক্ত জমাট বাঁধার আসল কারিগর। ল্যানসেডের কামড়ের পর নির্গত বিষ রক্তনালীর ভেতরের রক্ত জমাট বাধিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণাপত্র ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ল্যানসেড সাপের বিষে রয়েছে রেপটিলেজ নামক উৎসেচক বা এনজাইম। এটি সহজেই রক্তের ফাইব্রিনোজেন প্রোটিনকে ভেঙে সুতার আকারে ফাইব্রিন প্রোটিন তৈরি করে, যা জালকের মতো কাজ করে রক্তকণিকা আটকে দেয় ও রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় ইন্ধন জোগায়। এই স্বাভাবিক অথচ ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক ঘটনাকে ভিত্তি করে একদল গবেষকদল এমন একটি জৈব আঠা তৈরিতে উৎসাহিত হয়েছিলেন, যা রক্তক্ষরণ রুখে দিতে সক্ষম।

প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন কোলাজেন সংগ্রহ করে প্রথমে তা থেকে জিলাটিন প্রোটিন তৈরি করা হয়। রাসায়নিকের সাহায্যে তাকে সামান‌্য পরিবর্ধন করে পাওয়া যায় মিথাইল অ্যাক্রিলেট জিলাটিন।

আপাত নিরীহ এই তরল বস্তুটি আলোর সংস্পর্শে এলে একটা ‘ক্রশ লিংকড প্রোডাক্ট’ পাওয়া যায়, যা আদতে মজবুত বুননের একটি মশারির জালির মতো। একে কাজে লাগিয়েই গবেষকদল এই জৈব আঠা তৈরি করেছেন। যাতে রয়েছে রেপটিলেজ ও মিথাইল অ্যাক্রিলেট জিলাটিন। তা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে টর্চের আলো ফেললে ক্ষত জায়গায় জিটালিন ক্রস লিংকিংয়ের জন‌্য চাদর তৈরি হবে এবং রেফটিলেজ এনজাইমের উপস্থিতিতে ফ্রাইব্রিন তৈরি হয়ে রক্তকণিকার চারপাশটা বেঁধে ফেলবে।

এই সুপার গ্লু প্রাথমিক চিকিৎসাতেও গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাদের অনুমান, সড়ক দুর্ঘটনায় জখম ব‌্যক্তির রক্তপাত ঠেকাতেও এই আঠা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys