নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪২ জন ছিনতাইকারীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।
শুক্রবার রাতে এ সব অভিযান চালানো হয়। আটককৃতদের কাছে থেকে ৭৪টি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব, একটি ল্যাপটপ, ১৩টি ছুড়ি এবং দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার কারণে শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সব টিম একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান চালায়। মোবাইল ফোন ছিনতাই রোধে রাজধানীতে মোবাইল ফোন মেরামতের দোকানগুলোতে নজরদারি করা হবে বলে জানায় পুলিশ।
শনিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল বাতেন বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পর্যাপ্ত লাইট নেই। যে সব ল্যাম্পপোস্ট আছে সেগুলো বেশিরভাগ নষ্ট। এর জন্য গলিগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। এতে ওই সব এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। যে সব এলাকায় এমন অবস্থা, সেখানে আমাদের দায়িত্বশীলদের নজর দেয়া দরকার। নগরবাসীকেও ওই সব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।
তিনি বলেন, ছিনতাইকারীরা সুযোগ পেলেই ছিনতাই করে। তাদের আইনের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না। বেশিরভাগ সময় বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই হয়ে থাকে। আর সেটা গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোবাইল ফোন মেরামত দোকানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া মোবাইল কোথায় যায় এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, ছোটখাটো যে সব মোবাইল পার্টসের দোকান আছে তারা এ সব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। এ সব মোবাইল সরাসরি মানুষের কাছে বিক্রি করে না। বিশেষ করে কারও মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে চোরাই মোবাইলের পার্টস খুলে বিক্রি করা হয়। এ সব পার্টস বিক্রি করলে যে লাভ হয় তা মোবাইল বিক্রি করলেও হয় না। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। অচিরেই সে সব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।
মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাই বেশি হয়- এ জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সময়গুলোতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটে- তা বন্ধ করতে আমরা বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে পেট্রোলিং জোরদার করব। সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে ওই সব এলাকায় চিহ্নিত ছিনতাইকারী যারা তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুৎসাহিত হয়, এর পেছনে পুলিশের দায় আছে কিনা- এমন প্রশ্নে আবদুল বাতেন বলেন, ‘দায় বললে হবে না, এটা দায়িত্বশীলতা। নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব, কোথাও কোনো অপরাধ হলে- তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেয়া। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে শনাক্ত করা। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন, অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের জানাবেন। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।