নিউজ ডেস্ক: হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হওয়ার ২৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. সিএইচ রবিনের স্ত্রী রাখির অমানুষিক নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈকে (১১)।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আশোয়ার গ্রামের বিমলের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটি এবং তার সঙ্গে থাকা বড় মা পরিচয়দানকারী নারী নিখোঁজ হয়।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় বরিশালের উজিরপুর মডেল থানায় চিকিৎসক ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে শিশুটির চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ ডা. রবিন এবং তার স্ত্রী রাখি দাস এবং সহযোগী বাসু দেব।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, বৃহস্পতিবার শিশুটিকে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে হাসপাতাল থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়। ওইদিন হসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সামসুদ্দোহা তৌহিদ বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিপাকে আগৈলঝাড়া থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়।
ওসি আরও জানান, নিপাকে উদ্ধারের পরপরই তার চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে চিকিৎসক ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে চিকিৎসক যেখানে বসবাস করেন, সেখানকার থানার সহায়তা চাওয়া হবে। এরপর ওই থানা পুলিশের সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ মাস আগে ডা. রবিনের ঢাকার শ্যামলীর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ শুরু করে নিপা। কাজ শুরুর পর বিভিন্ন সময় চিকিৎকের স্ত্রী রাখি দাস নানা অজুহাতে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতো। কখনও গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, কখনও ছুরির খোঁচা, আবার কখনও দেয়ালে ঠোকা হতো তার মাথা।
রাগের মধ্যে কখনও তার গলা চেপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করতেন গৃহকর্তার স্ত্রী। অব্যাহত নির্যাতনে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নির্যাতনকারী লোকমারফত ঢাকা থেকে উজিরপুরের জামবাড়ি একটি দোকানের সামনে ফেলে যায় নিপাকে।