নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশি যুবক রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করায় মালয়েশিয়া প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কথা বলতে না পারা ও নিপীড়িত অভিবাসীদের পক্ষে কথা বলায় মালয়েশিয়া সরকার রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করেছে। খবর মালয় মেইল।
শনিবার বিকালে আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক মানবাধিকার, যার ওপর আল জাজিরা জোর দেয়।
‘আল জাজিরা কোনো রকম অপরাধী হওয়ার ভয়ভীতি ছাড়াই- মৌলিক মানবাধিকার হিসাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তার সমর্থনকে নিশ্চিত করে।’
নিজেদের টুইটারে কাতারভিত্তিক এ সংবাদমাধ্যমটি আরও লিখেছে, ‘বাংলাদেশি অভিবাসী রায়হান কবিরের গ্রেফতারের ঘটনা ‘হয়রানিমূলক’ ব্যাপার। তিনি প্রামাণ্যচিত্রে কথা বলার জন্য অনলাইনে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাকে উদ্দেশ্য করে বিদ্বেষমূলক কথা ছড়ানো হয়েছে। কথা বলার দায়ে এভাবে অপরাধী বানানোকে কখনোই আমরা সমর্থন করি না।
‘‘কথা বলতে না পারা ও নিপীড়িত মানুষের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক রায়হান কবিরকে নির্বাচন করার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই এই গ্রেফতারকে ‘হয়রানিমূলক’ বলে মনে করছে আল জাজিরা।’’
গত ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
২৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই প্রতিবেদনে করোনাভাইরাস মহামারীতে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে সরকারের আচরণ নিয়ে কথা বলেছিলেন রায়হান কবির।
সংবাদমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকে এর সমালোচনা শুরু করে মালয়েশিয়া। দেশটির সরকার ওই প্রতিবেদনে তোলা অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে।
আল জাজিরার ওই প্রতিবেদন প্রচারের পর থেকেই সাক্ষাৎকার দাতা বাংলাদেশি রায়হার কবিরের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তার বিষয়ে তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিও দেয়া হয়। পরে রায়হানের ওয়ার্ক পারমিট (কাজের অনুমতি) বাতিল করে দেয়া হয়।
এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক টুইট বার্তায় জানানো হয়। গ্রেফতারের পর তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করায় মালয়েশিয়া প্রশাসনের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশের ২১টি সংগঠন। তারা দ্রুত রায়হানের মুক্তির দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে।
এছাড়া মো. রায়হান কবিরের মুক্তির জন্য আইনি লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার দুজন আইনজীবী।
রায়হান কবিরের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বন্দরে। তার বাবা শাহ আলম একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ২০১৪ সালে তোলারাম কলেজে থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে মালয়েশিয়া চলে যান রাহয়ান। সেখানেই বিএ পাস করেন।