জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আব্দুল জব্বার-এর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
মরহুম আব্দুল জব্বার ছিলেন একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ও অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা সৈনিক আব্দুল জব্বার ১৯৬২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরী, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও শোভাযাত্রা করার কারণে গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে কুলাউড়া শহরে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণে ভুমিকা পালন করেন। ১৯৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ ’র ছয় দফা, ১৯৬৮’র আগরতলা যড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০’র নির্বাচন, ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ লিবারেল ফোর্স (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর ৪নং সেক্টরের অধীনস্থ মৌলভীবাজার সার-সেক্টরের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন রণাঙ্গনে সরাসরি যুদ্ধ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মম ভাবে নিহত হওয়ার পর, ১৭ই আগস্ট কুলাউড়া শহরে তিনি প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা আয়োজন করে। এজন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করেন এবং কারাভোগ ও নির্যাতনের শিকার হন।
একুশে পদক-এ ভুষিত জনাব আব্দুল জব্বার গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বদা স্বোচ্চার ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, সততা ও দেশপ্রেম সকলকে অনুপ্রাণিত করবে এবং জীবনাদর্শ তরুণ রাজনীতিবিদদের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে-বলে আমার বিশ্বাস।
আমি মরহুম আব্দুল জব্বার-এর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।