‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ স্লোগানকে সামনে রেখে লাখো মোমবাতির দীপশিখায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাল নড়াইলবাসী। একইসঙ্গে ৭২টি ফানুস উড়িয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন তারা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নড়াইল শহরের কুড়িরডোব মাঠের লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে।
মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে আড়াই হাজার শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ নেয়। অন্ধকার ছাপিয়ে নানা রঙের আলোয় আলোকিত হয়ে যায় বিশাল মাঠ। শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনা, পাখিসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় এ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে।
এ সময় ‘আমার ভায়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গণসঙ্গীত শুরু হয়। এর আগে মঙ্গল প্রদীপ জ্বলিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) মোসা. সাদিরা খাতুন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খান নিলু, পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয় কুন্ডু ও সাধারণ সম্পাদক শরফুর আলম লিটুসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
‘একুশের আলো’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তত্বাবধানে কয়েক শ সাংস্কৃতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও শ্রমিক প্রায় এক মাস যাবৎ এ আয়োজনকে সফল করতে কাজ করেছেন। ছয় একরের বিশাল কুরিরডোব মাঠে অন্যান্য বছরের মতো এবারও কলাগাছ এবং কাঠ দিয়ে শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা ও বিভিন্ন আল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।
নান্দনিক এ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে নড়াইলসহ পার্শ্ববর্তী জেলার হাজারো দর্শক উপস্থিত হন। পুলিশ, র্যাব, স্কাউট ও স্বেচ্ছাসেবক মাঠের চারপাশের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়জিত ছিলেন। তবে করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে এ আয়োজন হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘একুশের আলো’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে নড়াইল শহরের কুড়িরডোব মাঠে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচির সূচনা হয়।