নিউজ ডেস্ক: গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ও নাগরিক সম্মেলনের অনুষ্ঠানে বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। প্রায় এক মাসের চিকিৎসা শেষে গতকাল তিনি হাসপাতাল ছেড়েছেন। রনি ও আরেক দগ্ধ কনস্টেবল জিল্লুর রহমান বাড়ি যাওয়ার আগে তাদেরকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায় দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে রনি বলেন, আমরা অনেক সময় বলি, মানি ইজ দ্য সেকেন্ড গড। আমি বলবো, ডক্টর ইজ দ্য সেকেন্ড গড। বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেনসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা।
গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর বিকালে মেট্রোপলিটন পুলিশের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরিত হয়ে কৌতুক অভিনেতা রনি, পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুরসহ ৫ জন দগ্ধ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথমে স্থানীয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। দগ্ধের মাত্রা বেশি হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয় রনি ও জিল্লুর রহমানকে। রনির শরীরের ২৫ শতাংশ এবং জিল্লুরের ১৯ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদের শ্বাসনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রনিকে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সুস্থ করে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেয়ায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন ও তার টিমকে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পুলিশ কমিশনারকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আবু হেনা রনি ও কনস্টেবল জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর যে আস্থা রেখেছেন সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেছেন। আরও কিছুদিন এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। আবু হেনা রনি জাতীয়ভাবে পরিচিত একজন কৌতুক অভিনেতা। তার আহত হওয়ায় সাধারণ মানুষও অনেক কষ্ট পেয়েছেন। সুস্থ হয়ে ফিরে যাওয়ার খবরে মানুষ উজ্জীবিত ও উৎসাহিত হবে যে তাকে আবারো মঞ্চে দেখা যাবে।
সামন্তলাল সেন বলেন, ঘটনার পর তাদের চিকিৎসায় ১৩ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। আজকে আমরা রনিকে এখান থেকে রিলিজ দিয়ে দিচ্ছি। তাদের বিষয়ে সবসময় খোঁজ রেখেছেন আইজিপি এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ সবাই। দেশে গ্যাস বেলুনের ব্যবহারের বিষয়টি আরও নজরদারি করার আহ্বান জানান চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, আইজিপি’র মাধ্যমে আমি সবাইকে অনুরোধ করবো আপনারা সতর্ক থাকবেন। আমার মনে হয়, গ্যাস বেলুনের ব্যবহারটাকে আরও মনিটর করতে হবে। এটার জন্য অনেক বাচ্চারাও আহত হয়ে আমাদের হাসপাতালে আসে।
রনি বলেন, শুকরিয়া আদায় করছি তাদের কাছে, যারা আমাকে সুস্থতা দিয়েছেন। নতুন একটা জীবন দিয়েছেন। পোড়ার কষ্ট যে কতোটা, তা না পুড়লে আমি বুঝতাম না। চিকিৎসক, নার্সসহ সবাইকে অনেক কৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতা আইজিপিসহ পুলিশের মানবিক কর্মকর্তাদের প্রতি।