নিউজ ডেস্ক: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন। গভীর শ্রদ্ধা আর অফুরন্ত ভালোবাসার সাথে দিবসটি উদযাপন করেছে প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদে বাংলাদেশের প্রতিনিধি বিশিষ্ট কবি জনাব তারিক সুজাত, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনেস্কো বাংলাদেশ জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জনাব সোহেল ইমাম খান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেখ রাসেল সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, শেখ রাসেল ছিলেন নম্র – ভদ্র এবং আচরণে অত্যন্ত মার্জিত। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া শেখ রাসেলও পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। রাষ্ট্র প্রধানের সন্তান হিসেবে কখনো তাঁরা জীবন নির্বাহ করেননি। কবি তারিক সুজাত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর স্বরচিত কবিতা পাঠ করে সকলকে শোনান।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স ও মিনিস্টার (রাজনৈতিক) জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলম বলেন, মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানব ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞে, কাপুরুষ – ঘাতকের বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শাহাদাৎ বরণ করেন শেখ রাসেল। ক্ষমতা দখল কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে বহু দেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হত্যাকান্ড, সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা নারী ও কোমলমতি শিশু রাসেলসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে যে ভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তিনি আরও বলেন শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয় তো বাবার মতো দেশের নেতৃত্ব দিতেন, বাংলাদেশকে নিয়ে যেতেন অনন্য উচ্চতায়। চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ রাসেলের জীবনধারা তুলে ধরতে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
পরে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ফ্রান্স প্রবাসি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তাগণ শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের জীবনের উপর নির্মিত একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেষ পর্যায়ে জন্মদিন উপলক্ষ্যে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে কেক কাটেন চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলম।
এ সময় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করে। গত ১৭ অক্টোবর ২০২১ রোজ রবিবার দূতাবাস প্রাঙ্গনে প্রবাসি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করে। শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।