নিউজ ডেস্ক: উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিতর্কিত ‘শিশু বক্ত‘ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে দুই দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার দুপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এ পাঠানো হয়েছে।
দুই দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ওই শিশু বক্তাখ্যাত রফিকুল ইসলাম।
গাছা থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন জানান, পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত রোববার দুপুর দেড়টার দিকে রফিকুল ইসলামকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে মহানগরীর গাছা থানায় আনা হয়। আদালতের অনুমতিতে দুইদিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে মাদানী অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি হেফাজতকে সংঘটিত করতে হেফাজতের নানা কর্মসূচী ও সরকার বিরোধী কর্মের নানা পরিকল্পনা করার কথা বলেছেন। এর মধ্যে একটি ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমন প্রতিহত করার কর্মসূচী। ওই কর্মে জড়িত স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় অনেক নেতার নামও বলেছেন তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় আরো অনেক তথ্য তদন্তের স্বার্থে বলতে চাননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এর সিনিয়র জেল সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, কথিত শিশু বক্তা হাজতি নং-৯৩৮/২১ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গাছা থানার একটি মামলায় গত রোববার দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রিমান্ড শেষে তাকে গাছা থানা থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এ পাঠানো হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, রাষ্ট্রবিরোধী ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮ এপ্রিল র্যাবের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। র্যাবের নায়েক সুবেদার আবদুল খালেক বাদী হয়ে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। তার বিরুদ্ধে একই আইনে বাসন থানাও একটি মামলা হয়েছে।
এছাড়া গাছা থানার মামলার সঙ্গে পরে পর্ণভিডিও ধারণের অভিযোগে একটি বিশেষ ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। মাদানী গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
গাজীপুর সিটি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) শুভাশীষ ধর বলেন, গত ১৩ এপ্রিল গাছা থানা পুলিশ মাদানীকে সাত দিনের হেফাজতে চেয়ে গাজীপুরের আদালতে আবেদন করে। পরে ১৫ এপ্রিল ভার্চুয়ালী শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১০ ফেব্রুয়ারি গাছা থানা এলাকায় এক ওয়াজ মাহফিলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ওই মামলায় পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮ (৫)(ক) ধারা যুক্ত করে পুলিশ।
গাজীপুর মহানগরের বাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মারকাজুন নূর আল ইসলামিয়া নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা রয়েছে। হাফেজ রফিকুল ইসলাম মাদানী ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও পরিচালক। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে।