1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন

দেশে ফেরার অপেক্ষায় অর্ধলক্ষাধিক প্রবাসী

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০

ওমান সরকারের ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় সেখানে অবৈধভাবে থাকা অন্তত ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। দেশে ফেরার অনুমতিপত্র বা আউটপাসের জন্য তাঁরা ওমানের রাজধানী মাসকাটে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সালালায় কনস্যুলেটে ভিড় করছেন। দূতাবাস বলছে, দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন ২৫ হাজার কর্মী।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। সরকারি হিসাবে, দেশটিতে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। কিন্তু প্রবাসীরা বলছেন, এ সংখ্যা দেড় থেকে দুই লাখ। এর মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার কর্মী অবৈধ। তাঁদের বেশির ভাগেরই পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কারো শেষ হয়েছে (ইকামা) কাজের অনুমতি। কাজের চুক্তি শেষে নতুন চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় অবৈধ হয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকে। আবার বিভিন্ন অপরাধ করে কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে ওই দেশের জেলে ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাধারণত প্রতি পাঁচ থেকে ১০ বছর পর অবৈধ প্রবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে ওমান সরকার। এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থেকে যাওয়া প্রবাসী, পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয়। ওমানের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন এবং করোনা মহামারির ফলে সৃষ্ট সংকটের কারণে এ বছর অবৈধ প্রবাসীদের ওমানে পুনরায় প্রবেশ না করার শর্তে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সুযোগ দেয় দেশটির সরকার। এর আওতায় গত ১৫ নভেম্বর থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওমান ছেড়ে নিজ দেশে যেতে আগ্রহীদের জরিমানা থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৫ সালে প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়।

ওমান সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পর মাসকাটে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সালালায় কনস্যুলেটে প্রবাসীরা ভিড় করছেন। অনুমতিপত্রের জন্য ভোররাত থেকে একাধিক লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন হাজারো প্রবাসী। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার প্রবাসী লাইনে দাঁড়িয়ে অনুমতিপত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন।

দূতাবাসের সূত্র মতে, ১৫ নভেম্বর থেকে পরবর্তী পাঁচ দিনে ২০ হাজারেও বেশি প্রবাসী স্লিপ সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও এখন পর্যন্ত মাত্র সাত হাজার জনকে স্লিপ দেওয়া হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ হাজার অবৈধ কর্মী দেশে ফিরবেন বলে ধারণা করছে দূতাবাস। তবে এই সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ওমানের মাসকাট ও সালালাতে স্লিপের জন্য অপেক্ষারত ছয় বাংলাদেশি।

স্লিপ সংগ্রহের জন্য অপেক্ষারত প্রবাসীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন দেশে ফেরার অপেক্ষারত দুই প্রবাসী, যার অডিও কালের কণ্ঠ’র কাছে আছে। সালালাতে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও স্লিপ না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করে সিলেটের এক প্রবাসী গত শনিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, দূতাবাসে এসে ভালোভাবে সেবা পাচ্ছেন না তাঁরা। দূতাবাসের কর্মীদের আচরণও গ্রহণযোগ্য নয়।

কিশোরগঞ্জের যুবক বলেন, ওমান সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পরই গত ১০ নভেম্বর থেকে ভারত ও পাকিস্তান দূতাবাস তাদের নাগরিকদের আবেদন নেওয়া শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশ দূতাবাস নেওয়া শুরু করেছে আরো পাঁচ দিন পরে ১৫ তারিখ থেকে। হতাশা ব্যক্ত করে ওই যুবক বলেন, দূতাবাসের কাজ এত ধীরগতি যে মনে হয় না ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবৈধ হয়ে পড়া সবাই দেশে ফিরতে পারবে।

দূতাবাস ও কনস্যুলেটের সামনে ওমান প্রবাসীদের দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।

গত ১০ নভেম্বর ওমানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের এসংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়, অবৈধ প্রবাসীরা কোনো ধরনের জরিমানা ছাড়াই তাঁদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এ সময় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের নিজ নিজ দেশের দূতাবাসে যোগাযোগ করে পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহ করতে অনুরোধ জানায় দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। যাঁদের পাসপোর্ট বা ওমানের আইডি কার্ড (বতাকা) নেই তাঁদের নিজ নিজ দেশ থেকে জন্ম নিবন্ধন কপি অথবা নিজ দেশের ভোটার আইডি কার্ডের কপি সংগ্রহ করে দূতাবাসে জমা দিতে বলা হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে প্রায় দুই লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জন প্রবাসী ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে শুধু ওমান থেকেই আউটপাস নিয়ে এসেছেন ১৬ হাজার ৯৫ জন। ফিরে আসাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৯৪৮ জন ও নারী দুই হাজার ১৪৭ জন।

অনাপত্তিপত্র নিয়ে ওমানে যেতে পারবেন বৈধরা : করোনার কারণে কাজ হারিয়ে কিংবা ছুটিতে দেশে ফিরে আসা কর্মীদের জন্য ওমানের দরজা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। শেষ পর্যন্ত ওমানের বৈধ ভিসাধারী কর্মীরা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি শর্ত মেনে সে দেশে তাঁদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। গত সপ্তাহে ওমান দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈধ যাঁরা ওমানে ফিরে যেতে চান তাঁদের ঢাকায় দেশটির দূতাবাস থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। ওমানে পৌঁছনোর পর ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং পৃথক কক্ষ ও টয়লেট ব্যবহার করার শর্তে লিখিতভাবে রাজি হওয়া সাপেক্ষে এই অনাপত্তিপত্র দেওয়া হবে। সূত্র: কালেরকণ্ঠ

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys