নিউজ ডেস্ক: করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
সাংবাদিকদের জাহিদ হোসেন বলেন, সিটি স্ক্যানের ফাইনাল রিপোর্টে ‘মিনিমাম ইনভলবমেন্টের’ কথা বলা হয়েছে, যেটা সাময়িক রিপোর্টে বলা হয়েছিল। আমরা সবাইকে জানাতে চাই যে, সিটি স্ক্যানের ফাইন্ডিংস, সেটাকে ক্লিনিক্যালি আমরা মনে করতে পারি যে, এটি অত্যন্ত মিনিমাম, নেগলিজেবল। দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়া দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান অধ্যাপক জাহিদ।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আর আমরা গতকাল গভীর রাতে ম্যাডামের সিটি স্ক্যানের (চেস্ট) ফাইনাল রিপোর্ট হাতে পেয়েছি।
ডা. জাহিদ বলেন, গতকাল রাতেই লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমান, যিনি ম্যাডামের সব কিছু তদারকি করছেন, তিনিসহ দেশ-বিদেশে উনার মেডিকেলে টিমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথে আমরা পুরো রিপোর্টটি পর্যালোচনা করেছি।
তিনি বলেন, সকলের পরামর্শ নিয়ে আরেকটি ওষুধ যুক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসায় যেসব ওষুধপত্র আগে দেয়া হয়েছে, তা ঠিক আছে। ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল আছে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। গুলশানের বাসা থেকে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ নিরাপত্তায় এভারকেয়ারে নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আবার তাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে গত রোববার খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক একটি টিম চিকিৎসা শুরু চলছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত চিকিৎসক টিম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে। নিয়মিতই তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মো. আল মামুন ফিরোজায় গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার গুলো মনিটরিং করেন এবং সেগুলোর রিপোর্ট চিকিৎসক টিমের প্রধানকে অবহিত করেন।
চিকিৎসক টিমের সদস্যরা জুমে বৈঠক করে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেন। এসব বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও থাকেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও গুলশানে ‘ফিরোজা’র বাসায় তার গৃহকর্মীসহ আরো ৮ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন বাড়ি চলে গেছেন এবং বাকীরা ফিরোজায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৫ বছল বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দন্ডিত। দন্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়, শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন।