1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন

এইচএসসি: মূল্যায়নের সিদ্ধান্তে আপত্তি অনেকের

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০

নিউজ ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়ে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলো পরীক্ষার্থী-অভিভাবকরা। বুধবার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে এইচএসসি বা সমমানের ফল ঘোষণা করা হবে। তবে এমন সিদ্ধান্তে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষাবিদ ড. মুনতাসির মামুন বলেন, এমন সিদ্ধান্ত আমার কাছে যথার্থ মনে হয়নি। ৪ বছর আগের ফলাফল মূল্যায়ন একজন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে বাধাগ্রস্ত করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড ন্যূনতম নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষা আয়োজন করা উচিত ছিলো।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যদি একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দেয়ার যোগ্যতা অর্জন না করতে পারে, তাহলে সে এই ফলাফলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন।

এর আগে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলাদেশ জার্নালকে জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও পরীক্ষা আয়োজনে পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে শিক্ষাবোর্ডগুলোর।

শিক্ষাবিদ যতিন সরকার বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা সেন্টার বাড়িয়ে পরীক্ষা আয়োজন করাই যেত।

পরীক্ষা না হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই একটি জাতির সবকিছু। আমাদের জাতির ভবিষ্যত ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি জানি না কোন যুক্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো! তিনি সরকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহবান জানান।

সেলিনা পারভিন নামের এক অভিভাবক বলেন, আমি ফরিদপুর বোয়ালমারী উপজেলার একটি গ্রামে থাকি। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য ফরিদপুর সারদা সুন্দরী কলেজে ভর্তি করি। এপ্রিল মাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। অথচ সরকার ৬ মাস পরে কেন এমন সিদ্ধান্ত জানালো। পরীক্ষা হবে হবে করে মেয়ের হোস্টেলের জন্য আমাকে ৬ মাসের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হলো। আর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়েও আমি শঙ্কিত।

কলেজ শিক্ষকরা জানান, এমন সিদ্ধান্ত এক শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল তবে এক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশার। কারণ দীর্ঘ দু’বছরের যে প্রস্তুতি যে শিক্ষার্থী নিয়েছিলো তার আর কোন মূল্যায়ন থাকছে না। অপরদিকে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত একটি সুযোগ হিসেবে এসেছে। এছাড়াও আগে এইচএসসিতে যারা ফেল করেছে এবার তারাও অটো পাস হয়ে যাবে।

তবে বেশকিছু শিক্ষার্থী এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলেন, আগে জীবন এরপর লেখাপড়া। অনেক দেশেই পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ দেন তারা।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এমন সিদ্ধান্ত স্বপ্নভঙ্গের মতো। কারণ হিসেবে তারা বলেন, অনেক শিক্ষার্থী এসএসসি বা জেএসসিতে ভাল করেছ কিন্তু খুব ভাল করতে পারেনি। এইচএসসি তাদের জন্য যোগ্যতা প্রমাণের একটি প্লাটফর্ম ছিলো। তারা এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণের কথা ছিল। এর মধ্যে নিয়মিত ১০ লাখ ৭৯ হাজার ১৮১ এবং অনিয়মিত ২ লাখ ৬৬ হাজার ২০৮ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ এক-দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হলে আবারো পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। প্রাইভেট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৩৯০ এবং খারাপ ফলের কারণে ১৬ হাজার ৭২৭ জন পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। তবে মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফলাফল নির্ধারণের কারণে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীরাও কলেজের গন্ডি পার হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। করোনার কারণে তা স্থগিত করা হয়। করোনার কারণে এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা/মূল্যায়নের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys