নিউজ ডেস্ক: কথায় আছে সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল। অর্থাৎ যেখানে সরকারি জায়গা আছে যার ক্ষমতা আছে সেই দখল করেছে। সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭১ একর বনভূমি বেদখলে রয়েছে। আর এই দখলদারের সংখ্যা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮২ জন। এরমধ্যে দখলকৃত সংরক্ষিত বনভূমি পরিমাণ সংরক্ষিত দখলকৃত বনভূমির পরিমাণ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর এবং দখলকৃত অন্যান্য বনভূমির পরিমাণ ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর। সরকার সকল দখলদার উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এরজন্য এরইমধ্যে সকল জেলা প্রশাসকের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া কোন জেলায় কার দখলে কতটুক ভূমি রয়েছে সেগুলো বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইড এবং জেলা প্রশাসকের দফতরে নামের তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে।
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য পরিবেশন, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, তানভীর শাকিল জয়, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে উপস্থাপিত কাগজপত্র থেকে জানা যায় সারাদেশে সংরক্ষিত বন দখলকারী সংখ্যা ৮৮ হাজার ২১৫ জন। আর অন্যান্য বনভূমি দখলকারী সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৭ জন। অর্থাৎ মোট দলখদার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮২ জন। দখলদারদের মধ্যে শিল্পকারখানা রয়েছে প্রায় ৪০০টি। তারমধ্যে গাজীপুর এলাকায় আছে ১০০ এর কাছাকাছি এবং সারাদেশে রয়েছে প্রায় ৩০০টি শিল্প কারখানা।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা চাচ্ছি বেহাত হওয়া বনভূমি উদ্ধার হোক পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন আর বেহাত না হয়ে যায় সেটা নিশ্চিত করা। দখলদারদের একটি তালিকা প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে জেলা প্রশাসককে বন ভূমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি ইস্যু করা হবে।
তিনি বলেন, আশা করছি এ বছরের মধ্যে বেশ কিছু জমি ফিরিয়ে আনতে পারব। আমাদের টার্গেট আগামী ২-৩ বছর অর্থাৎ বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ভালো পরিমাণ বনভূমি উদ্ধার করা।
বৈঠকে আরও উল্লেখ করা হয় যে, বর্তমানে ‘সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প চলমান রয়েছে। উক্ত প্রকল্পটি ২৪৯৫.৬০৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি ২০২০ হতে ডিসেম্বর ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়েছে। সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণ ও মান উন্নয়নের মাধ্যমে সুন্দরবনের পরিবেশ সুরক্ষার জন্য প্রকল্পটি সুন্দরবন পশ্চিম ও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন দফতর সংস্থার প্রধানগণসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।