1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

রাজ-পরীর ‘রক্তারক্তি’ বের হলো আসল ঘটনা

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩

সিনেমার মানুষ তারা। কিন্তু গত দু’বছর ধরে যা করছেন, তাকে ‘সস্তা নাটক’ বলেই মনে করছেন দর্শক-নেটিজেনরা। বিয়ে থেকে শুরু করে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ছেলের জন্মদিন উৎসব, সবখানেই তারা নাটকীয়তার গল্প রচনা করেছেন। কোনও দক্ষ চিত্রনাট্যকারের লেখা গল্পেও যেন এত বাঁক নেই!

প্রায় তিন মাসের ব্যবধান ঘুচিয়ে গত ১৬ আগস্ট রাতে তারা মুখোমুখি হন। গানবাংলা টিভির কার্যালয়ে কৌশিক হোসেন তাপস ও ফারজানা মুন্নী দম্পতির উদ্যোগে পুনরায় ছেলের জন্মদিনের কেক কাটেন তারা। এরপর হাসিমুখে জড়াজড়ি, হ্যাপি এন্ডিং।

কিন্তু না, মিলনের এক দিনের মাথায় ফের আলাদা তারা; এবার আরও একধাপ এগিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড! শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ছবি পোস্ট করলেন নায়িকা। ক্যানোলা লাগানো দুটি হাত। আরেক নায়িকা তমা মির্জাকে ট্যাগ করে বোঝালেন, হাত দুটি তাদের দুজনের। জানা গেলো, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ঘরণী-নায়িকা।

এর কিছুক্ষণ পরই প্রকাশ্যে আসে নায়ক রাজের একটি ছবি, যেখানে তাকে রক্তাক্ত মাথা নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। মুহূর্তেই তৈরি হয় রহস্যময় পরিস্থিতি। ঠিক কীভাবে, কোথায় এমন রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটেছে, তা স্পষ্ট হয় না।

পুরো বিষয়টি জানার জন্য প্রথমে নায়ককে কল করা হয়। শুরুতে নম্বরটি খোলা পাওয়া গেলেও দ্বিতীয় দফায় তিনি ফোন বন্ধ করে দেন। এরপর নায়িকার নম্বরে কল করা হলে তিনিও প্রত্যাশিতভাবে ফোনকল এড়িয়ে যান।

অথচ এর এক দিন আগেই বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) গণমাধ্যমকে নায়ক আনন্দচিত্তে বলেছেন, ‘রাজ্যের সঙ্গে খেলা করছি, সময় দিচ্ছি। অনেক দিন পর ওকে ভালোমতো কাছে পেয়েছি। রাজ্যও আমাকে কাছে পেয়ে খুবই মজা করছে, হাসছে, খেলছে।’

এদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, রাজ-পরীর মিলনের একদিনের মাথায় হালের হিট নির্মাতা রায়হান রাফীর অফিসে নায়ক-নায়িকার মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাধে। এক পর্যায়ে তা গুরুতর রূপ নেয়। রক্তাক্ত হন নায়ক। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন পরীমণি, সঙ্গে বন্ধু তমা মির্জাও! গুঞ্জন রয়েছে, রাজ-পরীর হাতাহাতি থামাতে গিয়ে আহত হন খোদ তমাও! ফলে তিনজনই একই রাতে ভর্তি হন হাসপাতালে! যদিও তথ্যটির নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি নায়ক-নায়িকার কাছ থেকে। কারণ তারা দুজনেই কল রিসিভে অপারগ!

তবে রাজ-পরীর এই সময়ের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু তমা মির্জাকে পাওয়া যায়। তিনি পুরো ঘটনার বিস্তারিত বলেন। বলার আগে তার হাসপাতালে ভর্তির প্রেসক্রিপশনটি পাঠান বাংলা ট্রিবিউন-এ। যেখানে হাসপাতালে ভর্তির তারিখ ও কারণ স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে। হাসপাতালে তমার ভর্তি হন ১৮ আগস্ট রাত ১০টায়। ভর্তির কারণ, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা নিয়ে।

তমা বলেন, ‘‘প্রথম কথা হচ্ছে কেউ কারও হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কি চেকইন দেয়? আমি কিন্তু হাসপাতালে ঢুকেই সেটা দিয়েছি। দ্বিতীয়ত, আমি সেই মেয়ে, যে স্বামীর হাতের মার খেয়ে ঘর ছেড়েছি। সেটার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করার জন্য যা যা করা দরকার করেছি। তো সেই মেয়েটিকে অন্য কারও জামাই এসে মেরে চলে যাবে, আর আমি চুপচাপ হাসপাতালে শুয়ে কাঁদবো- সেটা তো কল্পনাই করতে পারি না। ফলে আমার বক্তব্য স্পষ্ট, রাজ-পরীর মারামারির যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেটার আশেপাশেও আমি ছিলাম না। ইভেন ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজ-পরী বাসা থেকে বেরিয়ে আমাকে ফোনও করেছে দেখা করার জন্য। আমি বলেছি, আমার জ্বর। আজ দেখা হবে না। এরপর পরী বললো, ‘ওকে বাসায় রেস্ট নাও। কাল দেখতে আসবো। এরমধ্যে কী হলো, আমি আর জানি না।’’

কিন্তু ১৮ আগস্ট দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ তমার হাত ধরে পরীমণি একই হাসপাতালে চেকইন দিয়েছেন। সেটিতে কি সন্দেহের যোগসূত্র প্রমাণ করে না? জবাবে তমা বলেন, ‘বলছি সেটাও। তো ১৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর জ্বরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি ১০টার দিকে হাসপাতালে যাই। ভর্তি হই। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সবাই জানেন, আমার অ্যাজমাটিক প্রবলেম রয়েছে। কিডনিতেও সমস্যা রয়েছে। ফলে শরীরে যাই হোক, তখন এগুলো জেগে ওঠে। তো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমি ওষুধ খেয়ে তো অচেতন অবস্থা। হঠাৎ আম্মু ডেকে ওঠালো, বললো পরী এসেছে। উঠে দেখি পরী হুইল চেয়ারে। সঙ্গে রাজ্য-চয়নিকা বৌদি, নাচের দুটো ছেলেসহ বেশ কজন আমার কেবিনে। পরী বললো, ওর জ্বর এসেছে। তাই চলে এসেছে। এরপর কাশতে কাশতে গল্প করলাম, সেটাই শেষ।’

তবে তমার মনে কষ্ট, সেদিন রাতে ক্যানোলা হাতে তাদের দুই হাতের ছবি ফেসবুকে পোস্ট না করলে, তাকে ‘মার খাওয়া’র গল্পটা শুনতে হতো না। তার ভাষ্যে, এটা পরী ঠিক করেনি।

খানিকটা ইশারায় বললেন তমা। তার ভাষায়, ‘প্রথমত পরী আমাকে এ বিষয়ে কিছুই শেয়ার করেনি। হতে পারে আমার শরীর খুবই খারাপ, তাই। হতে পারে, বলার মতো কিছুই ঘটেনি। তবে আমি পরীকে যতটুকু এখন দেখছি, সে তার রাজ্য ছাড়া পৃথিবীর আর কিছুর সঙ্গে নেই। না শুটিং, না মডেলিং, না আড্ডা। তার পুরো দুনিটাই এখন রাজ্য। ওর সুখটাই পরীর সুখ। ফলে পরীর মিলন বলেন আর বিরহ বলেন, তার সবটাই রাজ্যকে ঘিরে আবর্তিত। আমার মনে হয়, পরী বরাবরই চেয়েছে তার রাজ্য যেন ব্রোকেন ফ্যামিলি বিলং না করে। তার ছেলেটা যেন বাবার আদর থেকে বঞ্চিত না হয়। সে জন্য পরী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তারই প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পেলাম ১৬ আগস্ট গানবাংলার অফিসে। কিন্তু সেটাও ওয়ার্ক করলো না সম্ভবত। এখানে আমি পরীর কোনও দায় দেখছি না। নিশ্চয়ই এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে ১৮ আগস্ট রাতে, যেটা পরী প্রত্যাশা করেনি।’

এদিকে রাজ-পরীর চলমান লাভ-হেট প্রকল্পের সূচনা ২০২১ সালের অক্টোবরে। মাত্র এক সপ্তাহের পরিচয়ে তারা বিয়ে করে বসেন! না, তাৎক্ষণিক সেই খবর অবশ্য প্রকাশ করেননি। বরং তিন মাস পর ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি আচমকা জানালেন, নায়িকা মা হচ্ছেন। সেই সূত্রেই বেরিয়ে আসে তাদের বিয়ের উপাখ্যান। একই মাসের ২২ তারিখে তারা জাঁকজমক আয়োজনে ফের বিয়ে করেন। শুরু করেন আনুষ্ঠানিক দ্বৈত জীবন।

ধারণা করা হয়, এই বুঝি শেষ হলো তাদের সম্পর্কের নাটকীয় অধ্যায়। তাই মাতৃত্বের মতো পবিত্র, স্নিগ্ধ জার্নিতে নায়িকাকে সমর্থন, ভালোবাসা দিয়েছেন নেটিজেনরা। কিন্তু দফায় দফায় তাদের মধ্যকার ঝামেলা আসতে থাকে প্রকাশ্যে। দাম্পত্য জীবনে যদিও ঝগড়া-ঝামেলা সাধারণ বিষয়। কিন্তু সেটাকে বারংবার ‘হট টপিক’-এ পরিণত করেছেন তারাই। কখনও অন্য নায়িকার হাত ধরে দাঁড়ানোর কারণে নায়ককে সোশ্যাল কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ঘরণী নায়িকা, আবার কখনও নিজেদের মান-অভিমানের রেশ টেনে এনেছেন মানুষের সামনে।

নাটকের ক্লাইম্যাক্স অধ্যায়ের শুরু হয় গত মে মাসে। ২০ মে নায়িকার বাসা থেকে তল্পিতল্পাসহ বেরিয়ে পড়েন নায়ক। এর সপ্তাহ খানেক পর এক মধ্যরাতে নায়কের সোশ্যাল হ্যান্ডেল থেকে মুহুর্মুহু ফাঁস হয় ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও। সেসব চিত্রে অবশ্য অন্য তিন অভিনেত্রীকে দেখা যায় নায়কের সঙ্গে। ফলাফল- যা হবার তাই, সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে বিতর্কের ঝড়। এই ফাঁসকাণ্ডে আঙুল ওঠে ঘরণী-নায়িকার দিকেই। কিন্তু তিনি আবার ভিন্ন সুরে ক্ষোভ ঝাড়েন প্রকাশ্যে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সাফ জানিয়ে দেন, এই সংসার আর জোড়া লাগার নয়।

প্রায় তিন মাস ধরে সেই কথা অক্ষুণ্ণ রেখেছেনও বটে। কিন্তু গত ১০ আগস্ট যখন তাদের ছেলের প্রথম জন্মদিন উদযাপিত হলো, সেই সূত্রে নাটকের ক্লাইম্যাক্সেও নতুন মোড় আসে। নায়িকার উদ্যোগে আয়োজিত বার্থডে পার্টিতে আসেননি নায়ক। তবে বাসায় একান্তে গিয়ে ছেলেকে শুভেচ্ছা-ভালোবাসা জানিয়ে আসেন। এরপর গানবাংলার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ, অতঃপর ফের ফাটল।

কোনও দম্পতিকে নিয়ে এতো বেশি নাটকীয়তার সাক্ষী এর আগে হয়নি ঢালিউড। এটা যেমন তাদের ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি সামগ্রিক ইন্ডাস্ট্রির জন্যও অশুভ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও শরিফুল রাজ ও পরীমণির সেই বোধোদয় হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখনও এটুকু স্পষ্ট, পরীমণি বরাবরই চাইছেন স্বামী শরিফুল রাজ আর পুত্র রাজ্যকে ঘিরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে। কিন্তু সেই চেষ্টাটি কেন থিতু হচ্ছে না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

কেউ বলছেন, শরিফুল রাজের অনিয়ন্ত্রিত জীবনের কথা। কেউ বলছেন পরীমণির অতিসন্দেহের কথা। যদিও, এসব বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না রাজ-পরীর নিকটজনরা। যেমন চয়নিকা চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, রেদওয়ান রনি, রায়হান রাফী, কৌশিক হোসেন তাপস প্রমুখ। যারা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বহুবার চেষ্টা করেছেন এই সংসারের সুতোটা বেঁধে রাখতে।

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys