আহ সেই দিনগুলি! নব্বইয়ের দশকে বিশ্বকাপটা ছিল আমাদের জন্য অন্যমাত্রার এক আনন্দ । সেই সময় বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখা যেত পুরো গ্রামে একটি বা দুইটি টেলিভিশন থাকত ।তখন একসাথে বসে খেলা দেখার মজাই ছিল আলাদা ।
অন্যান্য কাজ শোষকরে টিভির সামনে বসা । তারপর ছিল টেলিভিশনের “ঝিরঝির” (অষ্পষ্টতা) দূর করার জন্য এন্টিনা ঘুরানো।
তারপর কাংখিত সেই মুহুর্ত- “তালিবাবাদ ভু-উপগ্রহ কেন্দ্রের মাধ্যমে এখন সরাসরি সম্প্রচার করা হবে আর্জেন্টিনা বনাম বুলগেরিয়ার খেলা সৌজন্যে ডানো,রেডকাউ…..…..”।
খেলার মাঝখানে কারেন্ট চলে যাওয়া! তখন যে কি আফসোস ,হাসফাশ- আর্জেন্টিনা কি গোল দিল, নাকি……
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা চিন্তা করে অনেক সময় ব্যাকআপ হিসেবে ব্যাটারিও থাকতো।
যাদের বাড়িতে টেলিভিশন ছিল কিংবা যারা মালিক তাদের সে কি ভাব ….. বিশেষ করে ওই বাড়ির কোন ছেলে মেয়ে যদি আপনার সাথে একসাথে স্কুলে পড়তো তাহলে স্কুলে যাবার পর তাদের অন্য ধরনের ভাব থাকতো।
নব্বইয়ের দশকে বাড়ির ছাদে পতাকা ওড়ানোর খুব বেশি প্রচলন ছিল না। তবে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার প্রতি সমর্থন ,উন্মাদনা তখনও ছিল।
মাদক নেয়ার অভিযোগে ম্যারাডোনা কে আর্জেন্টিনার পক্ষে এক বিশ্বকাপে খেলতে দেওয়া হয়নি ,তখন কি যে কষ্ট পেয়েছিলাম !
রঙিন টেলিভিশন সেই সময় ছিল একেবারেই হাতে গোনা।
সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটেছে। টেলিভিশন এখন শুধু ঘরে ঘরেই না ; রুমে রুমে।আর স্মার্টফোনের কল্যাণে এখন অনেকেই হাতে নিয়ে খেলা দেখেন ।তবে, সেই স্বাদ সেই ভালো লাগা কি আগের মত এখনো আছে?
মাঝে মাঝে মনে হয় -রঙিন নয়, বরং সেই সাদা-কালোর যুগটি ই আমাদের কাছে ছিল অনেক বেশি ভালো লাগার, আনন্দের।
মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বাবু (সাংবাদিক)
প্যারিস,ফ্রান্স