1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

সেই আকাশ যাত্রার মধুর স্মৃতি

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

আনিতা ফাহমিন:

 

আটলান্টিকের উপর বিমানের ককপিটে ভয়ে ভয়ে বসে আছি। পাইলট বললেন “ভাবি, এই বাটনে পুশ করেন। আরে ভয় কিসের, এখন আপনিই আমাদের উড়িয়ে নিয়ে যাবেন” সেদিন বিমানের চালক ছিলেন পরিচিত একজন।

১৯৯৭ সালের সামারের কোনো এক দিন প্রথমবার আমেরিকায় পা রাখি। উনি যাবেন ‘ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে’ একটি কনফারেন্সে। আমরা সঙ্গী হলাম ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত। জেএফকে’তে আত্মীয় বন্ধু স্বজনের বেশ ভালো জমায়েত। এরমধ্যে দুই গ্রুপে একদফা ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি! আমিতো লজ্জায় শেষ; এই বুঝি পুলিশ এলো, একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলো! বিষয় হলো, দু’গ্রুপই চায় তাদের গ্রুপলিডারের গাড়িতে সুলতান ভাইকে উঠাতে। শেষে উনার হস্তক্ষেপে নিজে একপক্ষের, আর বাচ্চাদের নিয়ে আমি অন্যপক্ষের গাড়িতে গেলে দফা রফা হয়।

কনফারেন্স থেকে ফিরে আমরা সহ আটলান্টায় দেবর, ফ্লোরিডায় ভাই, মিশিগান বোনের বাড়ি দুইদিন করে থেকে উনি ফিরে গেলেন দেশে আর আমি আমার দুই কন্যা সহ থেকে গেলাম বড় আপার কাছে।

 

 

মিশিগানে বেশ কিছুদিন বেরিয়ে আবার উল্টো পথ ধরলাম। এতো এতো লাগেজ সহ হাতে বড় মেয়ে, কোলে ছোটটাকে নিয়ে আকাশযাত্রা শুরু। তখন ভ্রমণ ছিল অনেক সহজ, সুখকর। এয়ারপোর্টে বিধিনিষেধ, নিরাপত্তার নামে ছিলোনা কোনো জটিলতা।

ফ্লোরিডায় দুইদিন ডিজনি ওয়ার্ল্ড উপভোগ করা, সেজোভাইয়ের আমার পছন্দের বক্স বক্স আইসক্রিম, বিস্কিট এনে লুকিয়ে রাখা ( ভাইয়ের তিন ছেলে ছোট ছিল, সব খেয়ে ফেলতো) ভাবির গল্প ও বিকেলে হাটতে বেরিয়ে রীতিমতো পাড়া-বেড়ানো খুব মনে আছে।

আটলান্টার চওড়া রাস্তায় ছোট দেবর মিলনের ফার্স্ট লেন থেকে ফোর্থ লেন বদলানো জিগজ্যাগ ড্রাইভিং খুব উপভোগ্য। আমার জা’ লিপিকে তখনকার মতো এখনো ব্রাইটন গেলে জ্বালিয়ে আসি। সবশেষে নিউইয়র্ক ভাইয়ের বাড়ি। তিনমাসে অনেক ঘুরাঘুরি, দাওয়াত শপিং গিফটের ছড়াছড়ি। আত্মীয় ছাড়াও অনেকের সাথে বেড়িয়েছি, এর অনুমতি অবশ্য দেশ থেকে আসতো।

ঐ ট্যুরে আজীবন মনে রাখার মতো ঘটনা মান্না দে এবং আশা ভোসলে’র কনসার্ট। আশাজী’র কনসার্টে আমি আর আরেফীন ভাইয়ের আক্ষরিক অর্থেই দৌড়ে দৌড়ে পৌঁছানো, গ্যালারি থেকে লাফ দিয়ে একটু ছুঁয়ে দেখার অদম্য ইচ্ছে-অনুভূতি আজো আমার মনে ভিষণভাবে দোলা দেয়।

একটা সত্য স্বীকার করতেই হয়। অল্প বয়সের চাকচিক্যের আকর্ষণ, সবার ভালোবাসার মুগ্ধতায় দেশে ফেরার দিন যত ঘনিয়ে আসছিলো এদেশে থেকে যাওয়ার লোভ ততই জাগছিল। যাইহোক, লোভকে জয় করে এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছলাম চড়বো বলে। বিমানের টিকেট এজেন্ট উনার স্কুলবন্ধু আমাদের নিয়ে ভিতরে তো ঢুকলেন, যেতে যেতে সেই ভাই প্লেনেও ঢুকে পড়লেন। হাই-হ্যালো করতে দেখে বুঝলাম সবাই পরিচিত।

আমাদের সিটে বসিয়ে হ্যান্ডব্যাগ জায়গামতো রেখে বললেন, ভাবি আর কিছু লাগবে? তখন এক বিমানবালা হেসে বললেন, স্যার, ম্যামকে এবার আমাদের হাতে ছেড়ে দিন, এখন থেকে আমরা উনার দেখাশোনা করব। ভাই তার প্রাণখোলা হাসি দিয়ে বিদায় জানিয়ে নেমে গেলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys