নিউজ ডেস্ক: পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনাকর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মৃত্যুকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান এবং পুলিশ প্রধান দু’জনেই।
যেখানে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের মৃত্যু হয়েছে সেই কক্সবাজারে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ এই বক্তব্য তুলে ধরেন।
আজই তারা দু’জনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সফরে যান, যখন পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে তীর্ব্র বিতর্ক হচ্ছে।
মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হাওয়ার পর থেকে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং পুলিশের দিক থেকে পরস্পর বিরোধী ভাষ্য পাওয়া যাচ্ছিল।
ঘটনার পর থেকে সেনাবাহিনীর অনেকের মধ্যে দৃশ্যত একটি ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে প্রতীয়মান হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া সেনাবাহিনীর গোপন দাফতরিক নথি থেকে সেটি বোঝা যায়।
এমন প্রেক্ষাপটে সেনা ও পুলিশ প্রধান কক্সবাজার সফর করেছেন। সেখানে তারা দু’জন উর্ধ্বতন সেনা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন।
বৈঠক শেষেই দুই বাহিনীর দুই শীর্ষ কর্মকর্তা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, ‘যে ঘটনাটা হয়েছে সেটা নিয়ে নিয়ে অবশ্যই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আমরা মর্মাহত এবং পুলিশ বাহিনীর সবাই মর্মাহত।’
তিনি বলেন, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটির উপর সেনা ও পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে।
সেনাপ্রধান বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে এর সাথে যারা সম্পৃক্ত থাকবে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এর দায়-দায়িত্ব কোনো প্রতিষ্ঠানের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে যে আস্থা এবং বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটি অটুট থাকবে।
‘এই ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে যাতে কোনো ধরণের সম্পর্কে চিড় ধরানো বা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করার কোনো প্রয়াস যাতে কেউ না চালায় সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করবো,’ বলেন সেনাপ্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধানের পাশেই বসা ছিলেন পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ।
তিনি বলেন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং আস্থার সম্পর্ক রয়েছে।
সেনাপ্রধানের কথার প্রতিধ্বনি করে পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদও বলেছেন, মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনাটিকে তারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছেন।
এই ঘটনা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে পারষ্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় সৃষ্টি করবে না বলে উল্লেখ করেন পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ।
বেনজির আহমেদ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ঘটনাটিকে ব্যবহার করে একটি মহল পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের চিড় ধরানোর চেষ্টা করছে।
‘এটাকে অনেকে এই সুযোগে দুই বাহিনীর মধ্যে কোনো বিষয় বলে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। এই সমস্ত উস্কানি দিয়ে তারা কখনোই সফল হতে পারবে না,’ বলেন পুলিশ প্রধান।
দুটো বাহিনীর প্রধান বলেছেন, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটির উপর তাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই কমিটি যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
সূত্র : বিবিসি