1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

মুমিনের জন্য সেরা উপহার শবেকদর

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২

মুমিন জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ মাস রমজান। বিশেষত এ মাসের শেষ দশকটি অসীম ফজিলতময়। কারণ শেষ ১০ দিনে রয়েছে লাইলাতুল কদর ও ইতিকাফের আমল।

হাদিসের বর্ণনা মতে, শেষ দশকের যে কোনো বিজোড় রাতে রয়েছে মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর। কুরআন হাদিসে সুস্পষ্টভাবে এ রাতের মহিমা ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ (সূরা কদর : ১)।

মুফাসসিররা বলেন, লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে পূর্ণ কুরআন একত্রে নাজিল করা হয়েছে কদরের রাতে। অতঃপর সেখান থেকে সুদীর্ঘ ২৩ বছরে রাসূল (সা.)-এর কাছে মানবজীবনের প্রয়োজনের আলোকে ওহি আকারে প্রেরণ করা হয়েছে।

কুরআন কারিমে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর।’ (সূরা কদর : ৩)।

হিসাব করলে দেখা যায়, এক হাজার মাসে ‘তিরাশি বছর চার মাস’ হয়। আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয়, ওই একটি মাত্র রাত ইবাদতে ব্যয় করতে পারলে তিরাশি বছর চার মাসেরও অধিক সময় ইবাদতের পুণ্য লাভ হবে।

রমজান ইবাদতের বসন্তকাল। অবারিত পুণ্যে চাষের উর্বর মৌসুম। এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান অন্যান্য মাসের তুলনায় অত্যধিক। বিশেষত শেষ দশকের একটি রাতও যাতে বাদ না পড়ে। কারণ রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।’ (বুখারি : ২০১৭)। শবেকদরের বরকত অর্জনের জন্য রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তারিখের রাতগুলোতে নিরবচ্ছিন্নভাবে আমাদের ইবাদতে মনোনিবেশ করা উচিত।

রমজানের শেষ দশকে রাসূল (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি আমল হচ্ছে ইতিকাফ। যা হিজরতের পর কোনো রমজানে তিনি বাদ দেননি। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূল (সা.) মদিনায় হিজরতের পর ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত প্রতি রমজানে শেষ দশক ইতিকাফ করেছেন এবং তার ইন্তেকালের পর তার পত্নীগণ ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি, মুসলিম)। অপর বর্ণনায় এসেছে তিনি প্রতি বছর ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং ইন্তেকালের বছর ২০ দিন ইতিকাফ করছেন।

পুরুষ ইতিকাফ করবে যে কোনো জামে মসজিদে। মহিলা স্বীয় গৃহের নির্জন স্থানে ইতিকাফ করতে পারবে। হাদিসের ভাষ্যমতে, ইতিকাফকারী ব্যক্তি যেহেতু পার্থিব সব বিষয় থেকে বিমুখ হয়ে সর্বদা মসজিদে, মহান প্রভুর দরবারে অবস্থান করেন, ফলে তার প্রতিটি মূহূর্ত ইবাদত হিসাবে গণ্য হয়। পাশাপাশি যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি সম্পাদন করার পথ সুগম হয়। বিশেষত লাইলাতুল কদর লাভ করার সৌভাগ্য অনায়াসে অর্জন হয়ে যায়।

ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের শেষ দশক ইতিকাফের সওয়াব হচ্ছে, দুটি হজ ও উমরাহ সমপরিমাণ।’ (বায়হাকি)। রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ইতিকাফ করবে, আল্লাহতায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখা সমমান দূরত্ব সৃষ্টি করবেন, প্রতি পরিখার প্রশস্ততা দুদিগন্তের চেয়েও বেশি।’ (শোয়াবুল ইমান)।

ইতিকাফ মহান প্রভুর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম পন্থা। দরবারে এলাহিতে নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতি, অন্যায়-অপরাধের স্বীকারোক্তি দিয়ে, নিরবচ্ছিন্নভাবে ইবাদত-বন্দেগি করে প্রভুর প্রিয়জন হওয়ার অবারিত সুযোগ রয়েছে ইতিকাফে। অশেষ ফজিলতপূর্ণ লাইলাতুল কদর এবং ইতিকাফের জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আসুন, পার্থিব সব কাজকর্ম আমরা দ্বিতীয় দশকে শেষ করে নেই। শেষ দশকটি প্রভুর সঙ্গে একান্তে, কিছু ভাব বিনিময় এবং ইবাদত করে তাঁর প্রেম আর নৈকট্য অর্জনে মনোনিবেশ করি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys