নিউজ ডেস্ক: করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতের রাজধানী দিল্লিকে এখন মৃত্যুপুরী বললেও আর প্রকৃত চিত্রটা বোঝানো যাবে না। শহরের বিভিন্ন শ্মশানের বাইরে রাস্তায় টোকেন নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃতদেহের দীর্ঘ লাইন। কুড়ি ঘণ্টা অর্থাৎ প্রায় একদিন কেটে যাচ্ছে সৎকার করতে। শ্মশানের দরজায় দরজায় ঘুরে জায়গা না পেয়ে কেবল বরফ চাপা দিয়ে ৪৮ ঘণ্টাও বাড়িতে মৃতদেহ রেখে দিচ্ছেন অনেকে। দ্য হিন্দু।
এরমধ্যে দিল্লির রাস্তায় দেখা মিলল মর্মান্তিক এক দৃশ্যের। শ্মশানে সৎকারের অপেক্ষায় রাস্তায় লাইনে থাকা একটি মৃতদেহ ছিঁড়ে খাচ্ছে কুকুর। গত রোববার ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির গাজিয়াবাদের হিন্দোন শ্মশান ঘাটের সামনে।
ত্রিলোকি সিং নামে ওই ব্যক্তির এক সহকর্মী সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, বৃহস্পতিবার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে সন্তোষ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন গভীর রাতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং রাত একটার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পিপিই কিট পরিয়ে মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতাল।
পরদিন সকাল ৮টার দিকে মৃতদেহ সৎকারের জন্য গাজিয়াবাদের হিন্দোন শ্মশানে নেওয়া হয়। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণে তখন শ্মশানের সামনে অনেক লম্বা লাইন। বাধ্য হয়েই অন্য মৃতদেহের মতো ওই ব্যক্তির লাশও রাখা হয় লাইনে। সেখানেই একটি কুকুর তার মরদেহ ছিঁড়ে খাওয়া শুরু করে। তীব্র গরমের কারণে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা পাশেই একটি ছাউনির নিচে থাকলেও বিষয়টি তারা খেয়াল করেননি।
ত্রিলোকি সিং আরও জানান, তারা সকাল ৮টার দিকে শ্মশানে পৌঁছালেও লম্বা লাইনের কারণে টোকেন দেওয়া হয় বেলা দশটায়। পরে সেই টোকেন পরিবর্তন করে নতুন সময় দেওয়া হয় সন্ধ্যা ৬টায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা একটু দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎই স্থানীয় এক ব্যক্তি এসে খবর দেন, রাস্তার কুকুর এসে মৃতদেহ ছিঁড়ে খাচ্ছে। পরে দৌঁড়ে দ্রুত তারা সেখানে যান। এদিকে মৃতদেহে কুকুরের কামড়ানোর সেই ছবি এবং সংবাদ গণমাধ্যমসহ প্রকাশ্যে আসায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে দিল্লি সরকার।