1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

বাবা কেন কন্যা দায়গ্রস্থ ?

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

– এস. আর. তুলি

প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা পালন করি বাবা দিবস। এ দিবসটির উৎস পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকেই। মাতৃহারা সনোরা সমার্ট ডড পরিবারে তার বাবার ভূমিকাকে সম্মান জানাতে এ দিবসটি পালন করা শুরু করেন ১৯০৮ সালে।
১৯৭২সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্রড নিক্সনের সময় থেকে দিবসটি অনুমোদন করেন । আমাদের দেশে বাবা দিবস জনপ্রিয়তা লাভ করে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে এবং সংবাদ মাধ্যমের বদৌলতে ২০০৫ সালের দিক থেকে।

দিবসটি বিভিন্ন ব্যান্ডের জন্য ইমোশনাল কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে দর্শককে নাড়া দেবার এক উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হ”েছ গত এক দশক যাবৎ। যার উদ্দেশ্য
যা ই হোক না কেন, বাবা প্রত্যেক সন্তানের জীবনে বিশেষ এক মানুষ কেননা তিনিই প্রথম বন্ধু যার সাথে বাইরে যাওয়া যায়, মজার খাবার খেলনা যা চাই সব অসম্ভবকে সম্ভব করার মানুষটাই বাবা। যেন সত্যিকারের আলাদীনের চেরাগের দৈত্য কিংবা সুপারহিরো। কর্মজীবন শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত বাবা ই সব ভরসা। বাবার সৎ জীবন যাপন সন্তানকে যে কেবল বংশগতভাবেই সৎ ও মানবিক হিসেবে গড়ে তুলে
তাই নয় বরং প্রতিদিন বাবাকে দেখে সন্তান শেখে। শিশু বয়সে বাবার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে শিশুরা কিন্তু বেড়ে উঠার সাথে সাথে যেন বদলে যায় আবেগগুলো। যে বাবাকে ছেড়ে একসময় খাওয়া হতো না ; কর্ম জীবন শুরু হওয়া মাত্র সময় নেই এই বাহানায় খোঁজ নেওয়া হয় না সেই সুপার হিরো প্রিয় বাবার । অনেক সন্তান যতদিন না নিজে বাবা হোন ততদিন পর্যন্ত ভেবেই নেন যে বাবার দায়িত্ব বাবা পালন করেছেন মাত্র। শুধু তাই নয় প্রতিযোগিতা আর শো অফের বাজারে দরিদ্র বাবাকে সন্তানের
হাতে লাঞ্চিতও হতে হয় চাহিদা অনুযায়ী কিছু দিতে না পারলে । পারিবারিক শিক্ষাটা সবাই সমান ভাবে পেয়ে উঠে না।

একটা সময় সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা কিংবা বাড়ির এক কোনে এক রুমে সারাদিন ফেলে রাখতে পিছপা হয় না বাবার আদুরের সন্তানেরা। বাবা হয়ত তরুন ছেলেকে বেকার থাকার কারনে গালি গালাজ করে, সিগেরেট কিংবা অন্য নেশায় আসক্ত হলে কঠোর শাসন করে এবং তখন সেই বয়সে বাবাকে ঘৃনা করে করে সন্তান, একটিবারও ভেবে দেখে না সন্তানের জন্য সমাজের কাছে বাবাকে কতটা জবাবদিহি করতে হয়। আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যেখানে একে অপরকে সবচে ভাল দেখাতে উদগ্রীব। নিজের ঘরের খবর না রাখলেও পাশের বাড়ির ছেলে মেয়েরা কি করছে তা রটিয়ে দিতে কোন সংবাদ মাধ্যমের অপেক্ষা করে না। এধরনের একটা পরিেেবশে বেড়ে উঠার কারনে বাবা ও সন্তানকে প্রচন্ড মানসিক চাপ ও ভীতির মাধ্যমে জীবন যাপন করতে হয়।

বাবা দিবসের উৎপত্তি কন্যার হাত দিয়ে হলেও কতটা সুখী হতে পারেন কন্যার বাবারা?
আমাদের সমাজে বিয়ে দেবার উপযুক্ত কন্যা সন্তান ঘরে থাকলে সেই কন্যার বাবাকে কি পরিমান সামাজিক টর্চারের শিকার হতে হয় সেটা বোধ করি সবাই ধারনা করতে পারেন। কোন ক্রমে কন্যা সন্তানের বিয়েতে দেরি হলে সেই বাবাকে বলা হয় কন্যা দায়গ্রস্থ বাবা। তখন আর বাবা কেবল বাবা থাকে না তার মাথায় বিশাল বোঝা। দায়গ্রস্থতা! এ দায় কেমন দায়? অনেক বড় একটা বৈষম্য এখানে, ছেলের বাবা হলে কিন্তু দায় নেই কন্যার বাবার ই কেবল দায়!

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েক দশক ধরে কন্যারা ক্ষমতায় থাকলেও বিগত ৫০ বছরে কন্যা দায়গ্রস্থ নেগেটিভ উপাধি থেকে বাবাদের বাঁচাতে পারেনি কেউ। না কোন সরকার না কোন এন জিও না আপনি না আমি। আমরা চোখ দিয়ে দেখি বাবাদের সামাজিকভাবে অপদস্ত হতে। যৌতুকের জন্য পাত্র পক্ষের কাছে যখন হাত জোর করে ছোট হয় সেই আলাদীনের চেরাগের বিশাল দৈত্য বাবাটি তখন আমরা কন্যারা মুখ
ফুঁটে বলি না,“ বিয়ে করবো না তবুও বাবাকে ছোট হতে দিব না।”

এ সমাজ বাবা বান্ধব সমাজ কবে হয়ে উঠবে জানা নেই । তবে আমরা চেষ্টা করতে পারি সত্যিকারের নারীর ক্ষমতায়নকে বাস্তব করতে। যেদিন কন্যারা কন্যা হিসেবে নয় সন্তান হিসেবে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে সাহসী ভূমিকা রাখবে সেদিন পরিবর্তন আসবে। আজ যে কন্যা শিশুটির বাবা আপনি তাকে গড়ে তুলতে হবে মানুষের মত। আর সমাজের সাথে লড়াই করার একটা শক্তি থাকা চাই। সেটা
সন্তান ও বাবা উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বাবারা কোন রকম প্রত্যাশা ছাড়া সন্তানকে পালন করে। তার সন্তানের স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে নিজের সবটুকু ঢেলে দেয় বাবা । সন্তানের কাছে বাবারা কিছুই চায় না

কোন উপহারও না চায় শুধু ভালবাসা শ্রদ্ধা ,আরেকটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় তাদের চাওয়া যেহেতু আপনি বাবার প্রতনিধিত্ব করবেন সেহেতু আপনার আচরনে যেন আপনার বাবাকে মানুষ স্মরন কওে ব্যস এটুকুই তার একমাত্র চাওয়া। অনেক সফল ব্যক্তিকে দেখবেন বাবা মারা যাওয়ার পর বিশাল একটা ফেসবুক পোষ্ট দিতে অথচ তিনিই আগের দিনটিতেও বাবার চিকিৎসা চালাতে ছিলেন চরম বিরক্ত। বাবারা কখনো
সন্তানকে ত্যাগ করে না তাই সন্তানেরও উচিত সবসময় বাবার পাশে থাকা।

বাবার জন্য ভালবাসা , শ্রদ্ধা আর দোয়া প্রতিদিন। কোন দায় না থেকে বাবারা চিরকাল ভালবাসার মানুষ হিসেবেই থাকুক প্রজন্মেও পর প্রজন্ম। সফল হোক বাবা দিবসের মূল উদ্দেশ্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys