নিজস্ব প্রতিবেদক: সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুই হারিয়ে যায়। যেগুলো একসময় ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়। কিন্তু অনেকে আছেন যারা পুরোনো ঐতিহ্যকে আকড়ে ধরে থাকেন। সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে চান দিনের পর দিন। তেমনই একজন হলেন ।
সিলেট অঞ্চলের লোক গান আর বাংলাদেশে ছড়িয়ে থাকা বাউল গান নিয়েই তার আগ্রহ। ছেলে বেলায় নিজের এলাকার সব বাউল আসরেই তার যাতায়াত ছিলো। পড়াশুনাতে মনোযোগি হলেও পিতৃবিয়োগে সেটি আর এগোনো সম্ভব হয়নি। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে এই গুণী শিল্পীর। বিভিন্ন চাকরির পাশাপাশি গান ছিল তার স্বপ্ন।
১৯৮৫ সালে জন্ম নেয়া পাগল পাঁচ ভাইবোনের মাঝে ২য়। আধুনিক শিল্পী আর প্রতিথযশা বাউলদের মাঝে তিনিও স্বপ্ন দেখতেন বড় আসরে গান করবেন। তাই হাজারো কাজের মাঝেই সুযোগ করে ঘুরতেন বিভিন্ন বাউল আর গানের আড্ডায়।
প্রচন্ড শখ থাকলেও গাইবার চেয়ে গান লিখতেই আগ্রহ তৈরি হলো বেশি।
মাত্র ৮/১০ বছর বয়সেই লিখে ফেলেন গান। পরিবারের কষ্ট লাঘব করতে ব্যস্ত থাকতেন সর্বদা। তবুও লেখা হলো..
“ও মন কামলারে
কারে খাওয়ায়বা তোমার
অসারের কামায়”
এরপর আর থেমে থাকতে হয়না পাগলকে। তার নৌকা চলতেই থাকে দুলেদুলে। দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম, হাসন রাজার গান তার ঠোটে সর্বক্ষণ।
প্রথম গান করার সুযোগ আসে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে। শ্রদ্ধেয় দেবদাশ চৌধুরী রঞ্জন দা তাকে সুযোগ করে দেন। মুলত সেটি ছিলো দলিয় সঙ্গীত। আর তাতেই ডানা মেললো পাগল চিরতরে। সেই উড়ান আজও থামেনি।
বড় শিল্পীদের গান করার পাশাপাশি নিজের লেখার সংখ্যা প্রায় এক হাজারের অধিক। নিজের লেখা ও সুর করা গান গেয়েছেন অল্পসংখ্যকই। এছাড়াও তার লেখা সুরে গান করেছেন বাংলাদেশের বরেন্য অনেক শিল্পী।
আলোচিত গান গুলোর কয়েকটি হলো..
পাপিষ্ঠ বান্দা।
মানুষ মইরা গেলে কদর বাইড়া যায়।
পুরুষ নির্যাতন।
নিমন্ত্রন।
কলঙ্ক।
ভুলিয়া না যাইও।
রুহানি।
মরা নদী।
মানব গাড়ী।
গুনের নাইয়া।
জীবন খাতা সহ আরো অনেক।
সম্প্রতি জীবন খাতা তার বহুল প্রচারিত একটি জীবনধর্মী গান। অডিও গানটি প্রশংসিত হবার পর তা ভিডিও চিত্র ধারন করে নতুন ভাবে প্রকাশ করলে যোগ হয় অন্যমাত্রা। দেশে বিদেশে গানটি অসংখ্য মানুষ নিজেরা গেয়ে, ভিডিও করে পোস্ট করছেন।
শুধুমাত্র হাসানের নিজস্ব ইউটিউবে ১ কোটির মত দর্শক গানটি শুনেছেন দেখছেন। অন্যদের পেজেও এ গানের অনেক দর্শকের উপস্থিতি।