1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

ফ্রান্সের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০২০

এ. এম. আজাদ, প্যারিস থেকে: “মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে, বাঁচিবার চাই” আজ এই অপ্রতিরোধ্য লাশের মিছিলের ক্রান্তিলগ্নে কবির এই আকুতি যেন বিশ্বের শান্তিকামী মর্ত্যের মানুষের চাওয়া।

সর্বশেষ সরকারি তথ্য অনুযায়ী ফ্রান্সে CORONA ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪,৫০০ জন ও এই পর্যন্ত ৯১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সরকারের পক্ষ থেকে অতি দ্রুত বিস্তারকারী এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সর্বোচ্চ জননিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।

মরণঘাতী এই ভাইরাসের প্রভাবে থমকে গেছে ফ্রান্সের স্বাভাবিক জীবন যাপন। গতকাল ১৪ ই মার্চ ২০২০ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপ প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী কেবলমাত্র ফার্মেসী, গ্রোসারি শপ, টোবাকো শপ, পোস্ট অফিস, ব্যংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোন গত ১৩ই মার্চ ২০২০ শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বর্তমান এই পরিস্থিতিকে ফ্রান্সের ১০০ শত বছরের ইতিহাসে সবচাইতে বিপদজ্জনক ও প্রতিকূল পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যা দিয়ে আগামীকাল ১৬ মার্চ ২০২০ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত সকল বিদ্যাপীঠ বন্ধ ও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা ঘোষণা দেয়ার ২৪ ঘন্টার ভেতর প্রধানমন্ত্রীর এই দ্বিতীয় দফা নির্দেশিনা আসলো।
ফ্রান্সের সীমান্তগুলোতে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ইউরোপের অন্যন্য দেশ থেকে অতি প্রয়োজন এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক দুটি বিমানবন্দরেরই আংশিক এলাকা যাত্রীসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অসংখ্য এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট বাতিল ঘোষণার কারণে এয়ারপোর্ট অনেকটা যাত্রীবিহীন ফাঁকা হয়ে পড়েছে। যাত্রীদের পরীক্ষায় ভাইরাস আক্রান্তদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আজকে পর্যন্ত ৩ নং বিপদ সংকেতে অবস্থানকারী দেশ হিসেবে ফ্রান্সের ৭০ বছরের সকল নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে না যাওয়ার জন্য জোরালো নির্দেশনা রয়েছে তাছাড়া ১০০ লোকের অধিক জনসমাগমের উপর ও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আজ ১৫ই মার্চ ২০২০ পূর্ব নির্ধারিত মিউনিসিপাল নির্বাচনের প্রথম রাউন্ড যথারীতি ভোট গ্রহন অব্যাহত রয়েছে কিন্তু ভোটকেন্দ্রগুলোকে সংক্রামক মুক্ত রাখার জন্য ব্যাপক স্যানিটারি ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আজ ছুটির দিন রবিবারে রাস্তাঘাট প্রায় যানবাহনশূন্য, সরকারি এই সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ক্যাফে রেস্তোরাগুলো রয়েছে বন্ধ। পর্যটক বিহীন ফ্রান্সের প্রায় প্রতিটি শহর জনমানবহীন ভৌতিক নগরীতে পরিণত হয়েছে। এ যেন এক অচেনা শহর।

প্রায় সকল সুপার মার্কেটের সেল্ফ এর দিকে নজর দিলেই ক্রেতাদের মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুদ করার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
অজানা আশংখ্যায় জনমনে একধরণের অস্থিৰতা ও নিরাপত্তাহীনতার ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মালিক-কর্মচারী উভয়ই আগামীর পরিস্থিতি নিয়ে দুঃচিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

এরকম অচল অবস্থায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মচারীদেরকে বেকার ভাতার জন্য চাকুরী থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
ফ্রান্স সরকার আসন্ন আর্থিক সংকট মোকাবেলায় ব্যবসার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে ভর্তুকি প্রদান করার আশ্বাস প্রদান করেছে, কিন্তু অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশিরা যেহেতু চুক্তিবিহীন কাজ করে থাকেন তাই এসকল সুবিধা পাবেন না বলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

মরণঘাতী অভিশপ্ত এই ভাইরাসের ছোবল থেকে অতি শিগ্রই যেন পৃথিবীর মানুষ মুক্ত হয়ে আবারো স্বাভাবিক জীবনের গতিধারা ফিরে পায় ফ্রান্স বাংলাদেশীদের এই প্রত্যাশা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys