1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

ঘাতকরা সেদিন শেখ হাসিনার বাসায়ও গুলি করেছিল

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১

নিউজ ডেস্ক: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তবে ঘাতকরা সেদিন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দম্পতি যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, সেই বাসা লক্ষ্য করেও গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিতে শেখ হাসিনা যে ঘরে থাকতেন, তার সামনের বারান্দা ও জালানার কাচ ভেঙে যায়। ঘরের দেওয়ালেও লাগে অনেকগুলো গুলি। সারা বাড়ি ভাঙা কাচে ভরে যায়।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ির (৬৭৭ নম্বর) এক বাড়ি আগের বাড়িটির মালিক আইনুল হক ও জামিলা হক দম্পতি। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনায় তাদের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির কথা জানিয়েছিলেন তারা। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত (বিদেশ যাওয়ার আগ পর্যন্ত) তাদের ৬৮০ নম্বরের বাড়িতেই মাসিক ৭০০ টাকায় ভাড়া থাকতেন শেখ হাসিনা-ওয়াজেদ মিয়া। ইতিহাসের অনেক কিছুর সাক্ষী এই বাড়ি ও তার বাসিন্দারাও। সেই সময়ের দোতলা এই বাড়িটি এখন তিনতলা হয়েছে। তবে সেই ঘর-বারান্দা রয়েছে আগেই মতো।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রির ঘটনা এখনো স্পষ্ট মনে আছে আইনুল হক ও জামিলা হকের। তারা বলেন, আমরা তখন নিচতলায় থাকতাম। আর হাসু (শেখ হাসিনা) থাকত দোতলায়। বঙ্গবন্ধুর বাসায় যখন গোলাগুলি শুরু হয়, তখন আমরা ভয়ে বাথরুমে চলে যাই। অনেকক্ষণ ধরে গোলাগুলি হয়। একপর্যায়ে আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। আমরা তখন আরও বেশি ভয় পেয়ে যাই।

আইনুল হক ও জামিলা হক বলেন, হাসুরা (শেখ হাসিনা) যে এক তারিখে বিদেশ চলে গেছে, এটা মনে হয় খুনিরা জানত না। স্মৃতিচারণে তারা বলেন, সেই রাতে শেখ হাসিনা ও ওয়াজেদ মিয়া যে রুমে থাকত, সেই রুমকে লক্ষ্য করেও গুলি চালায়। গুলি জানালার কাচে লাগে জানিয়ে সেই জায়গাটা দেখালেন। তবে সেটা এখন আর নেই। বেশ কয়েক বছর আগে পরিবর্তন করে নতুন জানালা তৈরি করা হয়েছে। এই দম্পতি আরও জানান, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার পরে কয়েকজন ঘাতক তাদের এই বাসাতেও এসেছিল। পানি চাওয়ার অজুহাতে তারা আসলে দেখতে এসেছিল, এই বাসায় কেউ আছে কি না?

পঁচাত্তরের সেই রাতে খুনিরা ৩২ নম্বরের পাশের অন্যান্য ভবনেও কি গুলি চালিয়েছিল, নাকি শুধু আপনাদের বাসা লক্ষ্য করেই গুলি চালায়? জবাবে আইনুল হক ও জামিলা হক জানান, সেদিন তারা আমাদের বাড়ি ছাড়া আশপাশের আর কোনো বাড়িতেই গুলি চালায়নি। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার পর তাদের লাশ সারা দিন পড়েছিল। বিকাল ৫টার দিকে লাশগুলো কফিনে করে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেই কালরাত্রিতে ঘাতকের দল নির্বিচারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে। ছোট্ট রাসেলকেও তারা রেহাই দেয়নি। সেদিনের সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো স্পষ্ট আইনুল হক ও জামিলা হক দম্পতির কাছে। হত্যার পরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দরজা খোলাই ছিল। নিজেদের চোখে সেদিনের সেই রক্তগঙ্গা দেখেছেন তারা।

সেদিনের সেই স্মৃতিচারণ করে তারা বলেন, সেদিন খুনিরা শুধু মুজিব ভাইয়ের পরিবারের সবাইকে হত্যাই করেনি, বাড়ির সবকিছু লুটপাটও করে। এই ঘটনার কিছুদিন আগেই ওই বাড়িতে দুটি বিয়ে হয়েছিল। খুনিরা মনে করেছিল হয়তো টাকাপয়সা আছে, তারা সবকিছু উলটপালট করে। সোফাগুলো কেটে ফেলে। এমনকি ইলেকট্রিসিটির বোর্ডও ভেঙে ফেলে। আলমারিগুলোর ডালা ভাঙা ছিল। কিন্তু মুজিব ভাইয়ের টাকাপয়সা বলতে তো তেমন ছিল না। তিনি কোনোদিন টাকাপয়সা জমাননি। সব সময় দেশের মানুষের কথাই ভেবেছেন।

আইনুল হক ও জামিলা হক এখনো এই বাড়িতেই বসবাস করেন। তবে বাড়িটার কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এখন নিজেরাই থাকেন দোতলায়। তারা বলেন, পঁচাত্তরের পরে চার বছর এই বাড়ি ভাড়া দিইনি। এগুলো ওভাবেই ছিল। ওদের (শেখ হাসিনা-ওয়াজেদ মিয়ার) ঘরের আসবাবপত্রগুলোও ওভাবেই ছিল তখন পর্যন্ত। অনেক ছবি ছিল। পরে সেগুলো দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys