করোনায় দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭৫১ জন। এ সময়ে রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৭৪৪ জন।নতুন শনাক্ত নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ লাখ ১৩ হাজার ২৫৪ জনে।
বুধবার করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮০৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ১৭ হাজার ২০২ জন।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে ৮০টি ল্যাব আছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৮টি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩২টি ল্যাব চালু আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৯৭৬টি। আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ২৫৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৩টি।
নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৪২ জনের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন ও নারী ১২ জন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ৪৪ হাজার ৫০৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৭৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৭২৯ জন।
সবার উদ্দেশ্যে নাসিমা সুলতানা বলেন, সচেতন হোন, সতর্ক হোন এবং করোনাকে প্রতিরোধ করুন। রোগ প্রতিরোধের জন্য সঠিকভাবে মাস্ক পরা, বারবার সাবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং জনসমাবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। শুধু মাত্র একটি উপায় অবলম্বন করে এ করোনাকে প্রতিরোধ করা যাবে না। সবগুলো পদ্ধতি একসঙ্গে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার (টাটকা শাকসবজি, ফলমূল), জিংক সমৃদ্ধ খাবার ও আমিষ জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। তেল চর্বি, লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি করতে হবে। ধূমপানসহ যেকোনো ধরনের তামাক ও তামাকজাত পণ্য এবং মাদকদ্রব্য পরিহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে করোনা গত ছয় মাসে বিশ্বের ২১৩ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে । চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। দেশে করোনা সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
করোনায় মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।