নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রতিবাদ-স্লোগানে সরব রয়েছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে নেমেছে।
এসময় চোখে কালো কাপড় বেঁধে নির্মমতার প্রতীকী প্রতিবাদ করেছেন তারা। সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের মূর্তির চোখও ঢেকে দেয়া হয়েছে কালো কাপড়ে।
এর আগে গতকাল সোমবার দিনভর বিক্ষোভে সরব ছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলো। রাতেও আলো হাতে ডাকসুর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরব ছিল শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জুনিয়রের সঙ্গে ঘটা পাশবিকতার বিচারের দাবিতে অনশনে বসেছিলেন মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী। গতকাল রাতে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরো তিন জন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে তারা আজও অনশন অব্যাহত রেখেছেন।
ছাত্রলীগের আলপনা
রোকেয়া হলের সামনের সড়কে আলপনা এঁকে ধর্ষকের বিচার দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ধর্ষকের মৃত্যৃদণ্ড চেয়ে স্লোগানে স্লোগানে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ছাত্রদলের প্রতিবাদ
সকালে মধুর ক্যান্টিনে জড়ো হয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা ধর্ষণের ঘটনার দ্রূত বিচার ও মামলা তদারকি করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
টিএসসি ভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ভিত্তিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দুপুরে তারা টিএসসির সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিবাদ
দুপুর ১২টার পরে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ মানববন্ধন করেছে সংগঠনটির শতাধিক নেতাকর্মী। শামসুন নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সঞ্চালনা করেন। পরে তারা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল, মানববন্ধন, পথনাটিকাসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন।
এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে।
ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।
এ ঘটনায় কুর্মিটোলা থেকে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পেয়েছে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান হক গণমাধ্যমকে বলেন, মামলার এজাহারে মেয়েটিকে একজন ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।