নিউজ ডেস্ক: নাটোরের বড়াইগ্রামে ইউপি নির্বাচনে সমর্থন না করায় তিন মাস আগে ফিরে আসা এক প্রবাসীর বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য। পরে প্রচার করা হয় যে, ওই বাড়িতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী রয়েছে।
ফলে আতঙ্কে প্রতিবেশীরা অনেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এক ঘরে হয়ে পড়েন ওই প্রবাসী ও তার পরিবার। উপজেলার চান্দাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চান্দাই গ্রামের খবির উদ্দীনের ছেলে বিকাশ খান বাবু (২৮) মালয়েশিয়ায় থেকে তিনমাস মাস আগে দেশে ফিরে নিজ এলাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। চলতি বছরের ৭ মার্চ মাস পাবনা জেলার আটঘরিয়া গ্রামে বিয়ে করে সুখে শান্তিতে সংসার করছিলেন।
বিগত ইউপি নির্বাচনে ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ বাবুর পক্ষে কাজ না করায় প্রতিশোধ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি দলবল সহকারে ওই প্রবাসী তরুণের বাসার সামনে লাল পতাকা টানিয়ে দেন এবং প্রচার করেন যে এ বাসায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী আছে।
মুহূর্তেই তা প্রচার হয়ে যায় এবং পুরো গ্রামে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর করোনাভাইরাস আতঙ্কে গ্রামবাসীদের অনেকেই গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।
প্রবাসী তরুণ বাবু পাসপোর্ট এবং বিমান টিকেট দেখিয়ে বলেন, ছয় বছর মালয়েশিয়া থেকে গত ১ জানুয়ারি তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপর থেকে তিনি গ্রামেই আছেন। চলতি বছরের ৭ মার্চ পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন। সরকারি ঘোষণার পর থেকে তিনি নববধূসহ তার পুরো পরিবার বাসায় অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ বাবু তার বাসার সামনে লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়ে এ বাসায় করোনা আক্রান্ত রোগী আছে বলে প্রচার করে।
চান্দাই গ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রবাসী ছেলেটা গ্রাম্য রাজনীতির শিকার হয়েছে। গত ভোটে ইউপি সদস্য বাবুর পক্ষে প্রবাসীর পরিবারের লোকজন কাজ না করার প্রতিশোধ হিসেবে এমন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ইউপি সদস্য মোহাম্মদ বাবুর মোবাইলে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, সমগ্র দেশের ন্যায় চান্দাই ইউনিয়নে বিদেশ ফেরত মোট ১৮ জন প্রবাসীর বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ইউপি সদস্য বাবু ভুলবশত ওই বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ বলেন, হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার পরও ওই বাসায় লাল পতাকা টানানো ঠিক হয়নি। আমি শোনার পরই ব্যবস্থা নিয়েছি। খবর: যুগান্তর