নিউজ ডেস্ক: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস, যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করে। এ উপলক্ষ্যে দূতাবাস প্রাঙ্গণে সকালে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর সন্ধ্যায় দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং শ্রীমদ্ভগবতগীতা, ত্রিপিটকসহ বিভিন্ন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বে বক্তাগণ বলেন যে, বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গৌরবময় ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুত্থান ঘটে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদানের কথা তাঁরা তুলে ধরেন। প্রবাসী বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও জনমানুষের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামের চেতনা বুকে ধারণ করার অঙ্গীকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারার প্রশংসা করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ।
ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন যার বিনিময়ে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়। রাষ্ট্রদূত বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জন করেছে। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল জাতির পিতার আজীবনের লালিত স্বপ্ন । এ প্রসঙ্গে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের গৃহীত নানান পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো- তাদের ২০২০ সালের অ্যানিভার্সারি প্রোগ্রামের তালিকায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে অন্তর্ভুক্ত করে এ আয়োজনকে আন্তর্জাতিকীকরণ করেছে এবং যৌথভাবে এ আয়োজনে বাংলাদেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। এ অর্জনের শুরু থেকে বলিষ্ঠ দিকনির্দেশনার জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এ সাফল্যের অংশীদার ফ্রান্স প্রবাসী সকল বাংলাদেশিকেও তিনি ধন্যবাদ জানান। একই সাথে তিনি মার্চ ২০২০ থেকে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত ‘মুজিব বর্ষ’ আয়োজনে প্রবাসী সকলের অংশগ্রহণ ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। সাংস্কৃতিক পর্বের পর বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মাধ্যমে অতিথিদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় ।