নিউজ ডেস্ক: রূপকথায় আমরা অনেক ঘুমের গল্প পড়েছি। সোনার কাঠি রুপার কাঠির স্পর্শে ঘুম ভেঙে যাওয়া, কয়েকশ বছর ঘুমিয়ে কাটানো; এমনকি কুম্ভকর্ণের ঘুমের কথাও আমরা জানি। আধুনিক এ সময়ে এসে সেগুলো শুধু ‘গল্পই’ মনে হয়। বছরের পর বছর ঘুমিয়ে থাকা অবিশ্বাস্য বটে! কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এক বা দুই বছর নয়, টানা ১৮ বছর ঘুমিয়ে রয়েছেন সৌদি রাজপরিবারের এক যুবরাজ। অর্থাৎ ১৮ বছর ধরে তিনি কোমায় আছেন। আর কোমায় থাকা মানে একপ্রকার ঘুমিয়ে থাকা। এ কারণে তাকে ‘স্লিপিং প্রিন্স’ বা ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’ বলে অভিহিত করা হয়।
সম্প্রতি প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল নামে ওই যুবরাজের একটি ছবি প্রকাশ করে দোয়া চেয়েছেন যুবরাজের ফুফু রাজকুমারী রিমা বিনতে তালাল। রাজকুমারী তার ভাগ্নে প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালালের একটি ভিডিও শেয়ার করে তার আরোগ্যের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দিক।’ ছবিতে তার বাবা খালেদ বিন তালালকেও দেখা গেছে।
বাবা খালেদ বিন তালালও সন্তানের জন্য দোয়া চেয়েছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন: ‘হে আল্লাহ তাকে সুস্থ করুন, তাকে রক্ষা করুন।’
যুবরাজ আল-ওয়ালিদ মূলত ২০০৫ সাল থেকে কোমায় রয়েছেন। সামরিক কলেজে পড়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। এতে মাথায় আঘাতের ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়।
‘দ্যা নিউ আরব’র খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ ১৮ বছর কেটে গেলেও খালেদ বিন তালাল ছেলের লাইফ সাপোর্ট খুলতে দেননি। তিনি এখনও আশা করেন, তার ছেলে একদিন জেগে উঠবে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে সে। তিনি বলেন, ডাক্তার আমাকে বারবার বলেছে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার বিষয়ে। আমি উত্তরে জানিয়েছি, দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু যদি আল্লাহর ইচ্ছায় হয়, তবে আমার ছেলে তার কবরে থাকবে।
স্লিপিং প্রিন্স সৌদি ব্যবসায়ী টাইকুন প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল আল সৌদের ভাই। কোমায় থাকলেও যুবরাজ আল-ওয়ালিদ মাঝেমধ্যেই সাড়া দেন বলে দাবি করেছেন আত্মীয়-স্বজনেরা। সর্বশেষ ২০২০ সালের অক্টোবরে আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যুবরাজ তালাল নিজের হাত সরিয়ে নিচ্ছেন। এ সময় তার বিছানার পাশে স্বজনরা কথা বলছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালেও এ রকম হাত নাড়ানোর দৃশ্য দেখা যায়।
২০১৭ সালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেলে কয়েক ডজন যুবরাজ, কর্মকর্তা এবং ধনকুবেরকে বন্দি করেন বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দেশটির অভিজাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য তিনি চরম সমালোচনার শিকার হন। ওই অভিযানে তাদের ১১ মাস আটক রাখা হয়। এর মধ্যে ‘স্লিপিং প্রিন্সে’র বাবা খালেদ বিন তালালও ছিলেন।