নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় গত সোমবার আঘাত হানা বিধ্বংসী এক ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবার আল-জাজিরার এক লাইভ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ এজেন্সি জানিয়েছে, দেশটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত হাজার ১০৮ জন। অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলছে, তাদের নিহত বেড়ে দুই হাজার ৫৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমান করছে, তুরস্ক-সিরিয়াজুড়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
উত্তর সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করছেন কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো প্রায় কেউ নেই।
ইস্তাম্বুলের একজন তুর্কি সাংবাদিক ইব্রাহিম হাসকোলোলু বলেছেন, লোকেরা এখনও ভবনের নিচে রয়েছে, তাদের সাহায্যের প্রয়োজন। তিনি বিবিসি নিউজকে বলেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আটকে পড়া লোকজন তাকে এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের ভিডিও, ভয়েস নোট এবং তাদের লাইভ অবস্থান পাঠাচ্ছে।
তারা আমাদের বলছে, তারা কোথায় আছে এবং আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না, হাসকোলোলু বলেছেন, তুরস্কের জন্য এখন প্রয়োজন সমস্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা।
সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানটেপের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এরপর স্থানীয় সময় প্রায় বেলা দেড়টার দিকে আরও একটি ৭ দশমিক ৫-মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি ‘আফটারশক’ ছিল না।
সোমবার পর পর দুটি ভূমিকম্পের পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে পর পর কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক ও কম্পন আঘাত হেনেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানান, দেশটিতে অন্তত ৬ হাজার ভবন ধসে পড়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আফাড তার সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, ২৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি জরুরি কর্মীকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে শঙ্কা হচ্ছে, এই শীত মৌসুমে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
জাতিসংঘ, ইইউ, ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ভারত, জাপান, ইরাক, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, গ্রিস, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের সরকার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সাহায্য পাঠানো হচ্ছে।