নিউজ ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি, নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করত একটি চক্র। একপর্যায়ে দামি উপহার পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলতেন চক্রটির সদস্যরা। এরপর তাঁরা কৌশলে হাতিয়ে নিতেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। গত সোমবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পার্সেল প্রতারক চক্রের হোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এই চক্রের হোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) কয়েক বছর আগেও কুলি ছিলেন। পার্সেল প্রতারণার মাধ্যমে বর্তমানে তিনি কোটিপতি হয়েছেন। রাজধানীতে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন তিনি। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানি লন্ডারিংসহ শতাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তারও হয়েছেন বিপ্লব।
গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের বাংলাদেশি সদস্যরা হলেন সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০) ও মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। চক্রের বিদেশি সদস্যরা হলেন নাইজেরিয়ার চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬) ও জন (৩১), অ্যাঙ্গোলার উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫) এবং ক্যামেরুনের গুলগ্নি পাপিনিক (৩২)। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি ম্যাগাজিন, ২৮টি মোবাইল ফোন, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেকবই, তিনটি ওয়্যারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেট কার, সাড়ে তিন লাখ জাল টাকা, ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং ২৬৩টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন তাঁরা। এক পর্যায়ে দামি উপহার, স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার, ইউরো পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলতেন।