নিউজ ডেস্ক: ভারতের ১৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি দেশটির প্রথম নারী আদিবাসী প্রেসিডেন্ট। আজ সোমবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার কাছে শপথগ্রহণ করেন তিনি।

শপথ নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে এসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেবা করার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। আমি ছোট একটি গ্রাম থেকে উঠে এসেছি, যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়াও কঠিন। রাষ্ট্রপতি পদে আমার পদোন্নতি কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয়। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দরিদ্ররা স্বপ্ন দেখতে পারে এবং স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।

একটি প্রগতিশীল দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ায় নিজেকে ‘সৌভাগ্যবতী’ মনে করছেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার পদোন্নতি দেশের সবার কৃতিত্ব। প্রতিটি দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ আমাকে এই পদক্ষেপে আশীর্বাদ করেছেন। আমি নারী ও যুবকদের আশ্বস্ত করতে চাই। তাদের স্বার্থ আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমিই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া প্রথম ব্যক্তি যে ভারতের স্বাধীনতার পরে জন্মগ্রহণ করেছে। ভারতের নাগরিকদের কাছে আমার আবেদন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে আমাদের একসঙ্গে চেষ্টা করতে হবে।

দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ভারতীয়দের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা এবং অধিকারের প্রতীক সংসদ। এখানে দাঁড়িয়ে আমি বিনীতভাবে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের বিশ্বাস এবং সমর্থন নতুন দায়িত্ব পালনে আমার কাছে একটি বড় শক্তি হবে। যারা বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল সেই দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পড়া, আদিবাসী- আমাকে তাদের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখতে পাচ্ছেন। আমার পদোন্নতির পেছনে তাদের আশীর্বাদ রয়েছে। এটা কোটি কোটি নারীর স্বপ্ন ও সামর্থ্যের প্রতিফলন।

তিনি আরও বলেন, আমি সেই আদিবাসী ঐতিহ্যে জন্মগ্রহণ করেছি যা হাজার বছর ধরে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবন চালিয়ে গেছে। আমি আমার জীবনকালে বন ও জলাশয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছি। আমরা প্রকৃতি থেকে প্রয়োজনীয় সম্পদ গ্রহণ করি এবং সমান শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রকৃতির সেবা করি।

১৯৭৭ সাল থেকে ২৫ জুলাই ভারতের প্রেসিডেন্ট পদে শপথগ্রহণ শুরু হয়। সেদিন ভারতের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট নীলম সঞ্জীব রেড্ডি শপথ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে সব প্রেসিডেন্ট ২৫ জুলাই শপথগ্রহণ করেছেন। কারণ, ১৯৭৭ সালের পর থেকে সব প্রেসিডেন্ট তাদের পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত পদে থেকেছেন। সেই অনুযায়ী সব প্রেসিডেন্টেরই মেয়াদ শেষ হয়েছে ২৪ জুলাই।