নিউজ ডেস্ক: ফেনীতে এক কিশোরকে দেহ তল্লাশির নামে আটক করে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে ইউনুস আলী নামের ফেনী মডেল থানার এক পুলিশ সদস্যের (কনস্টেবল) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ কর্মস্থল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, প্রথম নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে টানা তিন মাস ওই কিশোরের ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ কনস্টেবল ইউনুস আলী। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। একসময় বন্ধুদের লালসার শিকারে বাধ্য করতে চাইলে বেঁকে বসে কিশোর। পরে উপায়ন্তর না দেখে পরিবারের সদস্যদের জানালে থানায় মামলা হয়।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কিশোরকে বলাৎকারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ওই পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফেনী মডেল থানার সামনে নির্জন একটি স্থান বলাৎকারের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয় ইউনুস আলী। ধারণ করা বলাৎকারের ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে গভীর রাতে ওই স্থানেই কিশোরকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন তিনি।
নির্যাতিত ওই কিশোর জানায়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ফেনীর মহিপালে দেহ তল্লাশির নামে তাকে আটক করে ইউনুস আলী। এরপর তাকে নিয়ে যায় পাশ্ববর্তী একটি হোটেলে। সেখানে মামলার ভয় দেখিয়ে তাকে বলাৎকার করে ইউনুস। সে সময় মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নেয় সে।
শুধু তাই নয়, ইউনুস তার কিছু সহযোগীদেরও তার পেছনে লেলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ কিশোরের। সে আরও জানায়, নিজেকে রক্ষা করতে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে ইউনুসের মোবাইল চুরি করে সকল ভিডিও মুছে ফেলে সে। পরে চুরির অভিযোগে মোবাইল উদ্ধারে পুলিশ মাঠে নামলে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য। জানাজানি হয় পুরো ঘটনাটি।
এ ঘটনায় ১৩ এপ্রিল নির্যাতিত কিশোরের মা বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ইউনুস আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে তিনি জানান, শুধু ইউনুস আলী নয়, তার সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।
জানতে চাইলে ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, নির্যাতিত কিশোর পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। সে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেবে। আজ শুক্রবার কিশোরের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।