নিউজ ডেস্ক: সারাদেশে আশঙ্কাজনক হারে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত আইসিইউ না থাকায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছে ঢাকার বাইরের করোনা আক্রান্ত রোগীরা। অতিরিক্ত রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দেশের একমাত্র ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ৭০ ভাগ রোগীই ঢাকার বাইরের। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একই অবস্থা। এছাড়া রোগীর চাপ বেড়েছে রাজধানীর অন্যান্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে।
সাত মাসের শিশু কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় আহাজারি করছেন বিলকিছ বেগম। করোনা পজিটিভ আসলে এক সপ্তাহ আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর থেকে স্বামী অলি মিয়াকে (৩৫) ভর্তি করান রাজধানীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে। ভর্তির চারদিন পর অলি মিয়ার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
অলি মিয়ার ভগ্নিপতি সাব্বির মিয়া বলেন, ‘আমার বোন জামাই এতো অল্প বয়সে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবেন ভাবতে পারছি না। এখন আমার বোনকে কে দেখবে। আমার ভাগ্নির বয়স মাত্র সাত মাস।’
মহাখালী টিএনটি এলাকা থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে ভর্তি হতে গেছেন রহিমা বেগম (৬২)। রবিবার রাত থেকে চেষ্টা করেও তিনি আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি হতে পারেনি। তিনি বলেন, ১০ দিন ধরে জ্বর, ঠাণ্ডা-কাশিতে ভুগছি। এখন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাই ভর্তি হতে এসেছি। কিন্তু এখনো ভর্তি হতে পারিনি। হাসপাতাল থেকে আমাদের অপেক্ষা করতে বলছে।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে রোগী আমাদের এখানে বেশি আসে। আমরাও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে তাদের ভর্তি করাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, আমাদের এখানে যেসব রোগী আসছে তার ৭০ ভাগ ঢাকার বাইরের। বাকি ৩০ ভাগ ঢাকার কাছাকাছির। আমাদের হাসপাতালে এক হাজার বেড রয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযুক্ত। ২১২টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ১৩০টিতে রোগী রয়েছে। এইচডিইউ ৩৮০টি বেডের ২৫০টিতে রোগী আছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়া ৫০০টি সিলিন্ডার বেইজড ছোট ছোট রুম রয়েছে। প্রতিটি রুমে একজন রোগী রাখা যাবে।
কোভিড রোগীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। এই হাসপাতালে দুই একদিন পর হয়তো আর কোভিড রোগী ভর্তি নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ বেড ফাঁকা রয়েছে সেগুলো দুই-একদিনের মধ্যেই পূরণ হয়ে যেতে পারে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে রোগীর চাপের উপর।