নিউজ ডেস্ক: চাঁদপুরে বাসায় একা পেয়ে গৃহকর্মীকে টানা এক বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগে পলাতক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র আমজাদ মাহমুদ নিলয়কে (২১) অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে পুলিশ মঙ্গলবার আসামি আমজাদ মাহমুদ নিলয়কে গ্রেপ্তার করে চাঁদপুর থানায় নিয়ে আসে। আসামিকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে ১ মে গৃহকর্মী ধর্ষণে অভিযুক্ত আমজাদ মাহমুদ নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে শাহনাজ বেগমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগের দিন ৩০ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার গৃহকর্মীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ জানান, আবদুল মাজেদ (৫৪) ও শাহানাজ বেগম (৪৫) দম্পতি চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এ কর্মরত। তাদের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরশফী গ্রামে। তারা চাঁদপুর মডেল থানাধীন ওয়ারলেস সিরাজ বরকান্দাজের বাসায় ভাড়া থাকেন।
ওই দম্পতি তাদের নিজ গ্রামের এক মানসিক রোগীর ২৪ বছরের এক মেয়েকে (যার মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান) গৃহকর্মী হিসেবে এনে বাসায় রেখে দীর্ঘ চার বছর ধরে বাসার কাজ করিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো টাকা পয়সা পরিশোধ করা হয়নি ওই গৃহকর্মীকে।
ওসি আরো জানান, অপর দিকে ওই দম্পতি অফিসে চলে গেলে বাসায় থাকতেন তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় ও গৃহকর্মী। এই সুযোগে নিলয় বাসায় গৃহকর্মীকে এক বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন।
গৃহকর্মী বিষয়টি আব্দুল মাজেদ দম্পতিকে অবহিত করলে তারা বিষয়টি কর্ণপাত না করে তাকে উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করেন।
ওসি আরো বলেন, সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে আব্দুল মাজেদ দম্পতি অফিসে চলে গেলে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করেন নিলয়। পরে মেয়েটি এ ঘটনা নিলয়ের মা-বাবাকে জানিয়ে প্রতিকার চাইলে শাহনাজ বেগম ও তার ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। ভিকটিম তাদের দীর্ঘ দিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩০ এপ্রিল আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুল মাজেদ দম্পতির বাসা হতে রাস্তায় বের হন।
থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে ভিকটিমের থেকে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে পরের দিন শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে। এর পাঁচ দিন পর মূল অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।