নিউজ ডেস্ক: দিন দুই আগে নিজের ইনস্টাগ্রামে একটা ছবি পোস্ট করেন। মালদ্বীপে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটানোর ছবি। হালে বলিউড তরকা, শিল্পীদের ছুটি কাটানো পছন্দের শীর্ষে আছে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ দেশটি। তাই ওই ছবি নিয়ে আলাদা হইচইয়ের কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু বিশেষ কী কারণে ছবিটি আলাদা, সেটা বুঝতেই বেশ খানিকটা সময় চলে গেল। ছবিটি ছিল গায়ক আদনান সামির। কিন্তু কী এমন হলো যে আদনান সামির মতো পরিচিত গায়ককে চিনতেই এতটা সময় লাগল। কারণ, সামি আর ‘আগের সামি’ নেই।
ওজন ঝরিয়ে ঝরঝরে গায়ককে চিনতে খোদ তাঁর পাঁড়ভক্তকেও বেগ পেতে হয়েছে। তবে গায়কের ওজন কমানো ঝরঝরে চেহারা এখনকার নয়, আরও কয়েক বছর আগেই ২২০ থেকে কমিয়ে নিজের ওজন ৬৫ কেজিতে নিয়ে আসেন। মাত্র ১৬ মাসে ১৫৫ কেজি কমিয়ে রীতিমতো খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তখন। তবে নতুন ছবি পোস্ট করার পর তাঁর ছিপছিপে চেহারার ছবি আবারও ভাইরাল হয়েছে।
সেই সামি আর এই সামির ঘটনা বিশদে ব্যাখ্যা করতে গেলে একটু পিছিয়ে যেতে হবে গুনে গুনে ১৭ বছর। ২০০৫ সালে সামির ওজন ছিল ‘মাত্র’ ২২০ কেজি। গুরুতর অসুস্থ হয়ে তো সেবার মরতেই বসেছিলেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে বলে দেন ওজন না কমালে আর মাস ছয়েক বাঁচবেন। এরপর শুরু হয় তাঁর ওজন কমানোর যুদ্ধ। ২২০ থেকে কমিয়ে ১৫৫ কেজি হয়েছেন। তাতেই বিস্ময়ের শেষ ছিল না অনেকের। তবে সামি চমকের তখনো বাকি।
বছর চারেক আগে ১৫৫ থেকে কমিয়ে ৭৫ কেজিতে নিয়ে আসেন সামি। এরপর হন ৬৫ কেজি। তখন যেখানেই যেতেন তাঁর ওজন নিয়ে কথা বলতে বলতে চাপা পড়ে যেত গানের প্রসঙ্গ। তখন বলিউড হাঙ্গামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সামি বলেছিলেন, ‘ওজন কমানোর পুরো প্রক্রিয়ার ৮০ শতাংশই মানসিক, বাকি ২০ শতাংশ শারীরিক।’ ‘মানসিক’ বলতে গায়ককে লোভনীয় সব খাবার থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলেছেন বলা বাহুল্য।
দুই দিন আগে পোস্ট করা ছবিতে আদনান সামিকে দেখার পর নতুন করে তাঁর ওজন নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন মাত্র ১৬ মাসে দেড় শ কেজির বেশি ওজন কমানোর রহস্য কী? নতুন পোস্ট করা ছবিগুলোতে অবশ্য সে রহস্য ভাঙেননি। তবে ২০১৮ সালে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিটিভি ফুড গায়কের ওজন কমানোর দীর্ঘ যাত্রা নিয়ে প্রতিবেদন করে। অনেকে ওজন কমাতে অস্ত্রোপচারের আশ্রয় নিয়েছেন এমন কথা বললেও তা সরাসরি নাকচ করে দেন সামি, ‘১৫৫ কেজি ওজন কমিয়েছি। অনেক মানুষই আমাকে চিনতে পারে না। কিন্তু আমি খুবই খুশি। কারণ, এখন আমি শারীরিকভাবে অনেক সুস্থ বোধ করছি। পুরো জার্নিটাই আমার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।’
সামির মতে, ওজন কমানোর পুরো প্রক্রিয়ার ৮০ শতাংশই মানসিক, বাকি ২০ শতাংশ শারীরিক
সামি জানান, ওজন কমানোর যাত্রায় শুরুতেই ভারী ব্যায়াম করা নিষেধ ছিল। প্রথমে নজর দেওয়া হয় খাবার ও হালকা ব্যায়ামে। পুষ্টিবিদের নির্দেশনা মেনে কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন। ওজন যখন ধীরে কমতে শুরু করেছে তখনই শুরু করেন ব্যায়াম। তবে শুধু ওজন কমালেই তো হবে না, ধরে রাখতেও হবে। সেটা যে গায়ক ভালোমতোই করেছেন, সে তো বোঝাই যাচ্ছে।