নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে এসে হারিয়ে যাওয়া পোষা বিড়াল লিওকে অবশেষে নিজের কাছে পেয়েছেন জার্মান নারী জুলিয়া ওয়াসিমান। আজ মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা থেকে তাহিরপুর উপজেলা সদরে এসেই লিও’র কাছে ছুটে যান তিনি। এ সময় দেড় মাস পূর্বে হারিয়ে যাওয়া বিড়ালটিকে নিজের কোলে তুলে নেন ওই নারী।
এর আগে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা সদরের রায় পড়া গ্রামে বিড়ালটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন লোক আটক করে। পরে ঢাকা থেকে ভিডিও কলে জুলিয়া ওয়াসিমান নিশ্চিত করেন, এটিই তার হারিয়ে যাওয়া পোষা বিড়াল লিও। দীর্ঘ দেড় মাস অপেক্ষার পর প্রিয় বিড়ালকে কাছে পেয়ে খুবই আনন্দিত জার্মান ওই নারী।
স্থানীয় ছাত্রনেতা ধীমান চন্দ জানান, সন্ধান পাওয়ার পর লিও’কে আটক করতে গেলে একাধিক লোককে কামড়ে দেয় বিড়ালটি। রাতে কথা বলে নিশ্চিত হওয়ার পর আজ ভোরে ঢাকা থেকে জার্মান ওই নারী তাহিরপুর পৌঁছেই বিড়ালের কাছে ছুটে আসেন। কাছে পেয়ে বিড়াল ও বিদেশিনী দুজনেই খুব আনন্দিত ও আপ্লূত। বর্তমানে পোষা বিড়ালটি জার্মান নারীর কাছেই রয়েছে।
পরে পোষা বিড়ালকে নিয়ে সকালেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন জুলিয়া ওয়াসিমান। এ সময় তিনি বাংলায় খুব খুশি হওয়ার কথা জানান। পাশাপাশি বিড়ালটি খুঁজে দেওয়ার জন্য তাহিরপুরের লোকজনকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
স্থানীয় প্রধান শিক্ষক গোলাম সারোয়ার লিটন বলেন, জার্মান নারী জুলিয়া ওয়াসিমানের পোষা বিড়ালের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে। বিড়ালটিকে হারিয়ে যাওয়ার পর সেটির সন্ধানে অনেক দিন খোঁজাখুঁজি করেছেন। স্থানীয় লোকজনও অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেটিকে উদ্ধার করে তার মনিবের কাছে হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রামসার সাইট খ্যাত তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে যান জার্মান নারী জুলিয়া। সঙ্গে ছিল তার প্রিয় পোষা বিড়াল লিও। দিনভর হাওরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘোরা শেষে উপজেলা সদরে ফেরার পথে তাহিরপুর বাজার সংলগ্ন মেশিনবাড়ি ট্রলার ঘাট থেকে বিড়ালটি হারিয়ে যায়। এরপর কেটে গেছে দেড় মাস। নিখোঁজ বিড়ালের খোঁজে অনেকদিন তাহিরপুরে অবস্থান করেছিলেন এই ভিনদেশী নারী। সর্বশেষ বিড়ালকে খুঁজে না পাওয়ায় গত রোববার নিজ দেশে যাওয়ার উদ্দেশে তাহিরপুর ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে হাওরে ঘুরতে আসেন জার্মান নারী জুলিয়া ওয়াসিমান। তিনি বাংলায় কথা বলতে পারেন। বিড়ালটি হারিয়ে যাওয়ার পর তাকে ফিরে পেতে তিনি তাহিরপুরেই অবস্থান করছিলেন। এলাকায় মাইকিংও করিয়েছেন বিড়ালের সন্ধান চেয়ে।
মাইকে ‘লিও’ ও জুলিয়ার কথোপকথনও প্রচার করা হয়েছিল। যেন তা শুনে প্রিয় মনিবের কণ্ঠস্বর চিনতে পারে বিড়ালটি। এ ছাড়া কেউ লিও’র সন্ধান দিতে পারলে তাকে পুরুস্কৃত করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল।