নিউজ ডেস্ক: বিগত দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা সিলেট আওয়ামী লীগ নেতাদের। দল ক্ষমতায়। এরপর হাতছাড়া করতে হয়েছে নগর মসনদ। ভোটে পরাজয়বরণ করতে হয়েছে। এ নিয়ে আক্ষেপ, ক্ষোভ সবই আছে নেতাদের। আগামী বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ফলে সিটির মসনদ নিয়ে এবার আগে-ভাগেই সরব নেতারা। ভেতরে ভেতরে এক হওয়ার প্রস্তুতি। নগর মসনদের চেয়ার কেড়ে নিতে একক প্রার্থীর উপর ভরসা রাখছেন নেতারা। এবার নেই কামরান।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। নতুন কেউ প্রার্থী হচ্ছেন। কার ভাগ্যে জুটবে নগর মসনদের টিকিট- এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে বিশ্লেষণ চালাচ্ছেন নেতারা। ভেতরে ভেতরে চলছে প্রস্তুতিও। আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- দলের সব নেতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলেই তবে জয় নিশ্চিত হওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে দলের গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দরকার। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ জন প্রার্থীর নাম আলোচনায় এসেছে। হাওয়ায় ভাসছে এসব নামও। কেউ কেউ আবার আকার ইঙ্গিতে নিজেদের জানান দিচ্ছেন। এবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে যাদের নাম আলোচনায় এসেছে তাদের মধ্যে রয়েছেনÑ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মহানগর সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, কামরানপুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ।
এদের মধ্যে আসাদ উদ্দিন আহমদ, ডা. শিপলু ও আজাদুর রহমান আজাদ আছেন আলোচনায়। তারা ভোটের মাঠ প্রস্তুত করতে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তবে- সিটি করপোরেশনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কৌশলী। দলের মতামত ও সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে তারা চলছেন। সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে। গতবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান। নির্বাচনের প্রায় তিন বছরের মাথায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এবারো জেলা পরিষদে সিনিয়র ও গ্রহণযোগ্য কোনো নেতাকে খোঁজা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ। তবে- সিলেট-৫ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে অনেক আগে থেকেই তিনি মুখিয়ে রয়েছেন। এ কারণে তিনি জেলা পরিষদে আগ্রহী নন। গত নির্বাচনেও তিনি এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এবারো মাসুক উদ্দিন আহমদের অবস্থান একই। এছাড়া- এ পদে আলোচনায় আছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের নাম। তবে- নাসির উদ্দিন খানের নজর সিলেট-৬ আসনের দিকে। এজন্য নিজ এলাকায় তিনি সম্পর্ক বাড়াচ্ছেন।
জেলার সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী সিলেট-২ আসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এ আসনের সাবেক এমপি তিনি। এজন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে তিনি আগ্রহী নয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বিজিত চৌধুরী রয়েছেন অনেকের পছন্দের তালিকায়। মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ এ নেতা জেলা ক্রীড়া সংস্থার বাইরে অন্য কোথাও সম্পৃক্ত হননি। তবে- জেলা পরিষদ নির্বাচনে তরুণদের মধ্যে দলের মনোনয়ন পেতে লবিং চালাচ্ছেন অনেকেই।
এর মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সদস্য সুষমা সুলতানা রুহী ও সদস্য শামীম আহমদ। এর মধ্যে জয়নাল আবেদীন ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে রেখেছেন। দেরিতে হলেও গঠন করা হয়েছে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রিসভায় এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মসনদে বসতে অনেকেই মুখিয়ে আছেন।