নিউজ ডেস্ক: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাংবাদিকদের হেনস্থা করে উল্টো সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই জিডি করা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে রাজধানীর সূত্রাপুর থানার রায়সাহেব বাজার এলাকা থেকে রিয়াদসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বাংলানিউজকে জানান, শনিবার রাত দুইটার দিকে ইয়াবাসহ রিয়াদ ও খোকন নামে দুইজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছে তল্লাশি করে চার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
পরে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মাদক আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গেন্ডারিয়া এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাহবুব মমতাজি, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের নূরুল আমিন জাহাঙ্গীর ও দিন প্রতিদিন পত্রিকার রিপোর্টার পাপনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াদ ও তার সহযোগীরা।
পরে উল্টো তিন সাংবাদিকের নামেই গেন্ডারিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রিয়াদ। জিডিতে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রিয়াদ অভিযোগ করেন, ‘সাংবাদিকেরা কেন্দ্রে ‘বিএনপি জামায়াতের এজেন্ট হিসেবে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করেন।’
পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে’ রিয়াদকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি।
জানা যায়, ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ একজন পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ী। মতিঝিল থানা পুলিশ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ত্র কেনা-বেচার সময় নাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল হোসেন নোমানকে বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর রিয়াদের নাম বেরিয়ে আসে।
তারা আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতেও বলেছেন, ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ এবং কামরুল ইসলাম তাদের অস্ত্র বিক্রির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে ওই মামলায় আদালতে চার্জশিটও দাখিলের পর রিয়াদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন আদালত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াদ শুধু অস্ত্র ব্যবসা নয়, তিনি একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া এলাকায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির
অভিযোগও রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্ত্র মামলায় রিয়াদের বিরুদ্ধে যখন চার্জশিট দেয় পুলিশ তখন তিনি গেন্ডারিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তখন ছাত্রলীগ তার বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ২০১৮ সালে তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়।