নিউজ ডেস্ক: আবারও বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেছেন ফেসবুকের সাবেক কর্মকর্তা ফ্রান্সেস হাওগেন। গতকাল সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়ে আইনপ্রণেতাদের কাছে সাক্ষ্য দেন তিনি। এ সময় ফেসবুক কীভাবে সমাজে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তা তুলে ধরেন তিনি।
বর্ণবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দেওয়া কিংবা রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ঢাল হিসেবে ফেসবুককে ব্যবহারের অভিযোগ বেশ পুরোনো। বিভিন্ন দেশের সরকারের সমালোচনার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সাক্ষ্য দেন হাওগেন। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ দেন ফেসবুকের সাবেক এই ডাটা সায়েন্টিস্ট।
পার্লামেন্টে হাওগেন বলেন, ফেসবুক বিশ্বজুড়ে আরও সহিংসতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে, কেননা এর অ্যালগরিদমগুলো সেভাবেই সাজানো হয়েছে। ফেসবুক যতগুলো সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট মুছে দেয়, তার অধিকাংশই ডাটা এনালাইসিসের মাধ্যমে রোবট করে থাকে। কিংবা যেগুলো মানুষ কেবল রিপোর্ট করে সেগুলোকে নিয়েই কাজ করে ফেসবুক। তবে বিদ্বেষমূলক সব পোস্ট আদৌ প্রত্যাহার করা হয় না। একশ’ ভাগের মধ্যে মাত্র তিন থেকে চার শতাংশ বিদ্বেষমূলক পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হয়। বাকি সবই থেকে যায়।
সেইসঙ্গে ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠান ইন্সটাগ্রাম শিশুদের জন্য আদৌ কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন হাওগেন। ক্ষতিকারক কন্টেন্ট থেকে শিশুদের নিরাপত্তা দিতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে, অনলাইন ও ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে ক্ষতিকর বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রস্তাবনা আনতে যাচ্ছে তারা। বিশেষ করে শিশুদের গ্রুমিং, বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড এবং পর্নোগ্রাফির সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করতে আইন লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানাসহ অন্যান্য দণ্ডের বিধান রাখার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।
তবে, বিদ্বেষ ছড়ানো নিয়ে করা হাওগেনের এই মন্তব্যের কোন পাল্টা জবাব দেয়নি ফেসবুক। অন্যদিকে, ব্রিটেনের পার্লামেন্টে সাক্ষ্য দেওয়ার পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন প্রণেতাদের কাছে যাবেন ফ্রান্সেস হাওগেন। সেখানে একই বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরবেন তিনি।