নিউজ ডেস্ক: প্রবাসীকল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ত্রাণ দেবেন। এমন খবরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে জড়ো হন হাজারো মানুষ। আশায় বুক বাঁধেন বন্যার্ত অসহায় লোকজন। নিশ্চয় মন্ত্রী তাদের খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না- এমন প্রত্যাশা ছিল তাদের।
যথাসময়ে মন্ত্রী আসেন, বক্তব্য রাখেন, ত্রাণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী নিজ হাতে বিতরণের জন্য তালিকা থেকে লটারি করে তিনজন ‘ভাগ্যবান’ নির্ধারন করা হয়। এই তিনজনের একজন ছিলেন ‘মাহফুজ মিয়া’। মন্ত্রীর হাত থেকে তিনি গ্রহণ করেন ১০ কেজি চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ত্রাণের প্যাকেট হাতে নেয়ার পর হাসির ঝিলিক দেখা যায় মাহফুজ মিয়ার মুখে। কিন্তু তার মুখের সেই হাসি বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। ত্রাণ নিয়ে মঞ্চ থেকে নামার পরই মাহফুজের হাত থেকে কেড়ে নেয়া হয় ত্রানের বস্তা।
বলা হয়, এটা ছিল ফটোসেশন। পরে সবাইকে একসাথে ত্রাণ দেয়া হবে। মাহফুজের আর ত্রাণ নিয়ে বাড়ি ফেরা হয়নি। এর আগেই জড়ো হওয়া লোকজন কাড়াকাড়ি শুরু করেন ত্রাণের বস্তা নিয়ে। পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এর আগে অনেকেই কাড়াকাড়ি করে লুটে নেন ত্রাণের বস্তা। বিমর্ষ মাহফুজ ফিরেন খালি হাতে।
প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মংস্থান মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার তিন উপজেলার একটি কোম্পানীগঞ্জ। উপজেলার ৬ ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দি। এর মধ্যে ত্রাণের জন্য ২০০ জনের তালিকা করা হয়।
এই ত্রাণ বিতরণের জন্য শনিবার সকাল ১০টায় কোম্পানীগঞ্জ পৌঁছান মন্ত্রী। ত্রাণ বিতরণের খবরে উপজেলার হাজারো বন্যার্ত অসহায় লোকজন সেখানে জড়ো হন। মন্ত্রীর হাত থেকে ত্রাণ নেয়ার জন্য তিনজনকে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ছিলেন মাহফুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি যখন ত্রাণ নিতে যান তখন ছবি তোলা হয়, ভিডিওচিত্রও ধারণ করা হয়। ত্রাণ নিয়ে মঞ্চ থেকে ফেরার পরই মাহফুজের হাত থেকে কেড়ে নেয় হয় ত্রাণের বস্তা। বলা হয় পরে তালিকার সবাইকে একসাথে ত্রাণ দেয়া হবে।
বক্তৃতা ও ফটোসেশন পর্ব শেষে মন্ত্রী চলে যেতে না যেতে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে শুরু হয় ত্রাণের প্যাকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি। পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু মাহফুজ ফিরে পাননি তার ত্রাণের প্যাকেট।
গণমাধ্যমকে মাহফুজ বলেন, ‘সবার আগে মন্ত্রীর হাত থেকে আমি ত্রাণ নিয়ে আসলাম। কিন্তু তারা আবার নিয়ে নিলো। শেষ পর্যন্ত আর ত্রাণ পেলাম না। উল্টো পুলিশের লাঠির বাড়ি খেতে হলো।’
এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা যতই ত্রাণ দেই না কেন, তারপরও কিন্তু কম পড়বে। আমরা কোনো ইউনিয়নে ১০০ মণ চাল দিলে ১০০ জন পাবে, যদি ২০০ জন চলে আসে, তাহলে অর্ধেক করে সেটা দেয়া যায়, যদি খোলা চাল ও গম থাকে। কিন্তু প্যাকেট করা খাবার তো ভাগ করা যায় না। তাই যারা আগে থেকে তালিকাভুক্ত হয়েছে তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি নির্দিষ্টভাবে দেখাতে পারে যে তালিকায় অনিয়ম হয়েছে, আমি কঠিন ব্যবস্থা নেব।”