নিউজ ডেস্ক: আজ সোমবার থেকে শুরু হলো শোকাবহ আগস্ট মাস। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সঙ্গে হারিয়েছেন তার পরিবারের বেশ ক’জন সদস্যকে। শোকাবহ এই মাসে জাতীর পিতাকে নিয়ে একশ গানের একটি সংকলন প্রকাশ করেছেন লিসা কালাম। আর এটির তত্বাবধানে আছেন শিল্পীর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম। গানগুলো আজ উন্মুক্ত হয়েছে শিল্পীর ইউটিউব চ্যানেলে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ বিরতির ইতি টানতে যাচ্ছেন এই কণ্ঠশিল্পী।
শুধু তাই নয়, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১০০ গান গেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছেন লিসা কালাম। তিনি ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে। সেখানে থেকে ফিরতে মেইলে তাকে জানানো হয়েছে, শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বের এমন কোনো নেতার ওপর একশটি গান গাওয়ার রেকর্ড এখনো হয়নি।
দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে লিসা কালাম বলেন, ‘মাঝে গানের ভূবন থেকে দীর্ঘ বিরতিতে ছিলাম। তবে মনপ্রাণ সবসময়ই গানের মধ্যে ছিল। শিশু শিল্পী হিসেবে সংগীতাঙ্গনে আমার যাত্রা শুরু হয়। ৯০ দশকে আমার আমার কণ্ঠে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার একটি ক্যাসেট বের হয়। নাম ছিল “এ লাশ ঢাকা আসবেই”। সেই থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমি সব মিলিয়ে ৮০-৯০টি গান প্রকাশ করেছি। আর সম্প্রতি সময়ে নতুন করে আরও কিছু গান গেয়েছি। ৩২ বছরের সাধনায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সব মিলিয়ে মোট ১০০টি গান গেয়েছি।’
এই কণ্ঠশিল্পী আরও বলেন, ‘আমি ১৯৯৮ সাল থেকে আধুনিক গানে চলে আসি। এরপর ২০০৪-৫ পর্যন্ত গানের নিয়মিত ছিলাম। ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর গান নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিটিভিতে আমার একটি একক অনুষ্ঠান হয়। সেটাই ছিল আমার সবশেষ অনুষ্ঠান। তারপর সংসার জীবনসহ নানা কারণে গান থেকে দূরে থাকা হয়েছে। আমার অনেক জনপ্রিয় গান আছে শ্রোতামহলে। তবে আমার কণ্ঠে জনপ্রিয় গানগুলোর বেশির ভাগ অংশই জুড়ে আছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে।’
গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর প্রসঙ্গে লিসা কালাম বলেন, ‘ক’দিন আগে আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি আর বিষয়টি জানাই। তখন সেখান থেকে ফিরতি ইমেলে আমাকে জানানো হয়, বিশ্বের কোনো নেতাকে নিয়ে এ পর্যন্ত এত গান কোনো শিল্পীই করেনি। তাদের সেখানে আবেদনের কিছু নিয়ম আছে। আমি আপাতত সে কাজটিই করছি। আশা করি, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নামটি লিখাতে পারবো।’
লিসা কালাম জানান, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১০০ গানের তালিকায় থাকছে ‘আমি আর করবো না মা ইতিহাসের ক্লাস’, ‘কেমন কইরা ভুলবো ভাইগো বঙ্গবন্ধুর কথা’, ‘আমাকে বারবার টানে টুঙ্গিপাড়া, ওখানে ঘুমিয়ে আমাদেরই খোকা’, ‘তোমার সমাধি দেখে মনে হয়’, ‘আমি দেখেছি প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে’, ‘বঙ্গবন্ধু আবার যখন ফিরবেন’, ‘বঙ্গবন্ধু তোমাকে হারিয়ে’, ‘তোমার রক্তে ভিজে গেছে পৃথিবীর বুক’, ‘যদি রাত পোহালেই শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ ইত্যাদি।
গানগুলোর কথা লিখেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী, আবদুল লতিফ, আশরাফুল আলম, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রাহাত খান, কবি আবু জাফর সিদ্দিকী, ফজলুল হক খান, ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, হাসান মতিউর রহমান, সরদার আশরাফ উদ্দিন বাবুল, নুরুজ্জামান শেখ, সুব্রত সেন গুপ্ত, শ্যামল দত্ত, সোলায়মান খোয়াজপরী, কবি শাহজাহান, দেবাশীষ সরকার, শিহাব শাহরিয়ারসহ অনেকে।
সুর করেছেন দেবু ভট্টাচার্য, আব্দুল লতিফ, শেখ মহিতুল হক, শেখ সাদী খান, বদরুল আলম বকুল, মোঃ শাহনেওয়াজ, সুব্রত সেন গুপ্ত, আশরাফ উদ্দিন বাবুল, উজ্জল সিনহা, মুজিবুল হক সেন্টু, অবিনাশ শীল, শহীদ মাহমুদ প্রমুখ।