1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন

ফ্রান্সে শুদ্ধ সংস্কৃতির ধারক মৌসুমী চক্রবর্তী

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০
মৌসুমী চক্রবর্তী

সুরাইয়া নাজনীন:

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে,
চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,
মিটিয়ে দেব গো,মিটিয়ে দেব লেনা দেনা,
বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে–
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,

অভিমানের সুরে রবি ঠাকুর তাঁর গানে অনেক কিছু বুঝিয়েছেন। কিন্তু চাইলেই কি সব কিছু ভোলা যায়? মৌসুমী চক্রবর্তী দেশ ছেড়েছেন এক যুগ কিন্তু গান ছাড়তে পারেন নি। গানের প্রতি তার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, ভালোলাগার জায়গা অফুরান। বলছিলাম ফ্রান্স প্রবাসী শিল্পী মৌসুমী চক্রবর্তীর কথা। তিনি ‘আমাদেরকথা’ কে বললেন গান নিয়ে তাঁর জীবেনর নানা গল্প –

গানের শুরুটা কিভাবে হয়েছিল?

মৌসুমী চক্রবর্তী বলেন, খুব ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে ওঠা বসা। আমার কাকুর বাড়িতেই ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদ আর সেখানে গুণীজনের ওঠাবসা হতো প্রতিনিয়ত। সত্যি কথা বলতে গানের আবহ ছিল চারপাশে।
হাতে খড়ি দিয়েছিলেন হিরেন সিং। তারপর আনন্দলোকে শিখেছি রানা কুমারের কাছে। আমার ছোটভাই রবিন্দ্রভারতী থেকে পড়ে গীতবিতান নামে একটি একাডেমী প্রতিষ্ঠা করে, সেখানেও কিছুদিন গিয়েছি। শুরুরতো শেষ নেই, এখনও শিখে যাচ্ছি।

 

মৌসুমী চক্রবর্তী

গান শেখানো হয়েছে কখনও?

যখন দেশে ছিলাম তখন কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে শিখিয়েছি কিছুদিন। ফ্রান্সে এসেছি ২০০৮ সালে। এখানে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়। তবুও চর্চা রাখার জন্য কয়েকজন বাচ্চাকে শেখায়। ‘আমাদের আড্ডা’ নামে আমাাদের একটি ছোট্ট ক্ষেত্র আছে সেখানে মাঝে মাঝে আসর জমে, আড্ডাও হয়।

শিল্পী হিসেবে কোন মিডিয়ায় কি যুক্ত ছিলেন?

দেশে থাকতে বিটিভিতে এনলিস্টেড ছিলাম। সিলেট বেতারে নিয়মিত গান গেয়েছি।

দেশে থাকতে গান নিয়ে অনেক ভেবেছেন কিন্তু প্রবাস জীবনে সেই জায়গাটি একটু হলেও কী নড়বড়ে হয়েছে?

গান আসলে প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ব্যস্তাতার কারণে অনেকটা সরে গিয়েছিলাম। মাঝখানে আমার ভাইয়ের বউ এসেছিল ফ্রান্সে, ওর প্রচুর উৎসাহে আমি নতুন করে ভাবার আগ্রহ পেয়েছি। আগ্রহ অনুপ্রেরণার জায়গায় আরও অনেকেই ছিলেন, তাদের কথা না বললেই নয়, রাহুল ভাই, মাসুম ভাই তাঁরা আমাকে নিয়ে ডুয়েট প্রােগ্রাম করিয়েছেন। ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন প্রকাশ রায়, সেইখানে আমি কন্ঠ দিয়েছি। ডকুমেন্টারির বিষয়ে একটু না বললেই নয়, এটা তৈরি হয়েছে ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে, তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ফরাসি জনপ্রিয় “লু মণ্ড” পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনেক কবিতা লিখেন এবং মুক্তিযুদ্ধের উৎসাহ ব্যঞ্জক রচিত অনেক বাংলা কবিতার অনুবাদ করেন যা ফরাসি বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য পাতা ও সংকলনে প্রকাশ হয়।
ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক “মৈত্রী সম্মাননা”, ফরাসি সর্বোচ্চ রাষ্টিয় সম্মাননা “নাইট” উপাধিসহ অনেক সম্মাননা লাভ করেন। ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সাত বছর বয়সে টাইফয়েড আক্রান্ত হলে তাঁর পা দুটো অনেকটা অচল হয়ে যায়। তবুও প্রবল ইচ্ছা শক্তি, মানসিক দৃঢ়তা ও অবিরাম প্রচেষ্টা তাঁকে সফলতার শিখরে নিয়ে এসেছে।
ফ্রান্স প্রবাসী নির্মাতা প্রকাশ রায় তাঁকে নিয়ে নির্মাণ করেন “ইলুসিয়ন দু’ন প্রমনাদ” (ILLUSION D’UNE PROMENADE ) নামে একটি তথ্যচিত্র। যেখানে আমি কণ্ঠ দেয়ার সুযোগ পাই, আর এই কাজটি ছিল সারাজীবন মনে রাখার মতো।

কোন ধরনের গান আপনার পছন্দের তালিকায়

প্রথমে অবশ্যই রবীন্দ্রসঙ্গীত। তাছাড়া পুরোনো দিনের গান, আধুনিক গানও গাই।

ফ্রান্সে সংস্কৃতির মূল্যায়ন কেমন?

প্রবাস জীবনে সবাই সময়কে ভীষণভাবে উপভোগ করে। কোন উৎসব,পার্বণে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করতে ব্যস্ত থাকে আমাদের কমিউনিটির লোকজন। ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাস, স্বরলিপি শিল্পগোষ্ঠি, আমাদেরকথাসহ আরও অনেকে নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

করোনাকাল কিভাবে কাটছে?

এখানে নতুন করে করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সাবধানে, সচেতনতার সঙ্গে থেকে যতটুকু চলা সম্ভব তাই করছি। অনলাইনে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছি। প্যারিসের জানালা দিয়ে করোনাকালে অনলাইন প্রোগ্রাম শুরু করেছি।’

অনেক কিছু জানা হলো, সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys