নিউজ ডেস্ক: এক যুবককে আটকের পর হাতে ইয়াবা দিয়ে বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিস কক্ষে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ফাঁস হওয়ার পর তা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে।
যুবককে পিটিয়ে হাতে ইয়াবা তুলে দিলেন মাদক কর্মকর্তা!
এরপর নড়েচড়ে বসেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মহাপরিচালক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডুকে নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে (বুধবার দুপুর থেকে) তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী যুবক মারুফ বরিশাল নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোডের বেগের বাড়ির এলাকার বাদশা সিকদারের ছেলে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে পরিদর্শক আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে মারুফকে নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে আটক করা হয়। পরে মারুফের কাছ থেকে ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে ওই রাতেই বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় মামলা করেন পরিদর্শক আব্দুল মালেক। ওই মামলায় ১৭ দিন কারাভোগ করে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন মারুফ।
এরই মধ্যে মারুফকে নির্যাতন করে তার হাতে মালেক ইয়াবা দিচ্ছে এমন একটি ভিডিও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আসার পর তা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া থেকে শুরু করে প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়।
পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার বলেন, যে ভিডিওটি বের হয়েছে সেখানে মারুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল তার সাথে আর কেউ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত কিনা। তাকে ভয় দেখানো হয়। তেমন নির্যাতন করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
আব্দুল মালেক আরো জানান, মারুফ সিকদার কাউনিয়া এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তার শরীর তল্লাশি চালিয়ে ওই ইয়াবা পাওয়া যায়। তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ সত্য নয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় প্রধান অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু জানান, মহাপরিচালকের নির্দেশে পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয় পাঠাতে পারবো।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার একটি ভিডিওচিত্র ফাঁস হয়। সেখানে দেখা যায় হাতে হ্যান্ডকাফ পরানো এক যুবককে। হাতে তুলে দেয়া হয় কয়েক পিস ইয়াবা। এরপর ওই ইয়াবা গুণতে বলা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে পানি চাইলেও করা হয় নিষ্ঠুর আচরণ। সঙ্গে ছিলো অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল। পাশেই লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। ভিডিও ফুটেজ অনুসারে, আব্দুল মালেক মারুফ সিকদারকে নির্যাতন করেন এবং তিনি মারুফের হাতে ইয়াবা তুলে দেন।