নিউজ ডেস্ক: শুরুতে নারীদের ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও ধীরে ধীরে নিজেদের আগের ধ্যান-ধারণায় ফিরে যাচ্ছে তালেবান। তারা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তাদের অধীনে নারীদের ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ ও আতঙ্ক। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো যখন দেশটিতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে, তালেবান তখন তাদের পুরোনো নিয়মই আবার আফগানিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কট্টর এই ইসলামিক গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি বলেছেন, আফগান নারীদের পুরুষের পাশাপাশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া ‘উচিত হবে না’। আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিয়ম চালু করা হলে সরকারি অফিস, ব্যাংক কিংবা মিডিয়া কোম্পানিসহ অনেক ক্ষেত্রেই আফগান নারীদের কাজের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি রয়টার্সকে জানিয়েছেন,তালেবান সরকার আফগানিস্তানে ‘শরিয়া আইন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে চান। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলে আসছে, আফগান নারীরা যদি চায়, চাকরি করার অধিকার তাদের আছে, এবং সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।
এর আগে, তালেবান শাসনামলে পুরুষের লিখিত অনুমতি ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। আবার লিখিত অনুমতি থাকলেও তাদের বের হতে হত সর্বাঙ্গ ঢাকা বোরখা পরে। বয়ঃপ্রাপ্ত হলেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ, নারীদের চাকরি করার কোনো সুযোগও ছিল না।
ইতোমধ্যে দেশটির নারী রাজনীতিবিদদের অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। সেই সাথে নারী ক্রীড়াবিদ, অভিনয় শিল্পী, সাংবাদিক এবং অধিকারকর্মীদের অনেকেই আছেন আত্মগোপনে।
নারীদের কাজের সুযোগের পাশাপাশি কথা উঠছে তাদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ নিয়েও। নারীরা কীভাবে শিক্ষা গ্রহণ করবে, সে বিষয়ে সম্প্রতি নতুন নিয়ম জারি করেছে তারা।
গত সপ্তাহে তালেবানের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি বলেছেন, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন; তবে পুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে তাদেরকে ক্লাস করতে হবে। নারীদের জন্য একটি নতুন ইসলামিক পোশাকও চালু করা হবে। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিষয় পড়ানো হচ্ছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে।
এদিকে, তালেবানের শাসনে থাকা আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কতটা সহযোগিতা পাবে তা এখন নির্ভর করবে নারীদের সঙ্গে তারা কেমন আচরণ করছে, মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন থাকছে তার ওপর।