নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর মিরপুরের সনি স্কয়ারে স্টার সিনেপ্লেক্সর শাখায় লুঙ্গি পরে সিনেমা দেখতে যাওয়ায় এক প্রবীণকে টিকিট না দেওয়ার অভিযোগে সরগম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বিষয়টিকে ‘বৈষম্য’ উল্লেখ্য করে অনেকেই এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
গতকাল বুধবার ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই প্রবীণ দাবি করেন লুঙ্গি পরেছেন বলে তার কাছে সনি স্কয়ারের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি করা হয়নি। সে জন্য সিনেমা না দেখেই তাকে বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ওই প্রবীণ বলেন, ‘লুঙ্গি পরেছি বলে আমার কাছে টিকিট বিক্রি করবে না। এখন সিনেমা না দেখেই চলে যাব।’
এই ঘটনার পর ‘পরাণ’ সিনেমার নায়ক শরিফুল রাজ ও নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম ওই প্রবীণের খোঁজ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে তারা সিনেমা দেখবেন বলেও জানান।
অবশেষে ওই প্রবীণের খোঁজ পাওয়া গেছে। তার নাম আমান আলী সরকার। তিনি সিরাজগঞ্জে থাকেন, পেশায় একজন শাড়ি ব্যবসায়ী। কয়েকদিন আগে ঢাকার মিরপুরে ছেলের বাসায় বেড়াতে এসেছেন তিনি। বুধবার ‘পরাণ’ সিনেমা দেখার জন্য তিনি সনি স্কয়ারে গিয়েছিলেন।
বুধবারের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে আমান আলী সরকার বলেন, ‘আমি গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় সনি হলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। কাউন্টারে দাঁড়িয়ে বললাম, একটা টিকিট দেন। তখন আমাকে বলল, ‘‘আপনি কী লুঙ্গি পরেছেন?’’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ’। তারপর আমাকে বলল, ‘‘সরি, টিকিট হবে না’’।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমি সেখান থেকে চলি আসি। তখন আমাকে দুইজন লোক প্রশ্ন করে বলেন, ‘কাউন্টারে কী বলল?’
আমি বললাম, লুঙ্গি পরে এসেছি বলে আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপর আমি বাসায় চলে আসি।’
ওই প্রবীণ বলেন, ‘শুনলাম নায়িকা নাকি আমাকে বাবা বলেছেন। তাহলে সিনেমা দেখলে আমি আমার মেয়ের সঙ্গেই দেখব।’
এদিকে ওইদিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে ভিডিও ধারণকারী এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘মুরব্বিকে টিকিট না দেওয়ায় আমি জিজ্ঞেস করলে কাউন্টার থেকে বলা হয়, লুঙ্গি পরে ঢোকা যাবে না। ২০০১ সাল থেকে নাকি এই নিয়ম চলছে সনিতে।’
এই ঘটনায় তুমুল সমালোচনা হলে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা গ্রাহকদের সঙ্গে কোনো কিছুর ওপর ভিত্তি করে বৈষম্য করি না। আমাদের সংস্থায় এমন কোনো নিয়ম বা নীতি নেই যা একজন ব্যক্তিকে লুঙ্গি পরার কারণে টিকিট কেনার অধিকারকে অস্বীকার করবে। আমরা জানাতে চাই, আমাদের সিনেমা হলে সবাই নিজেদের পছন্দের সিনেমা দেখার জন্য সব সময় স্বাগতম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘটনাটি সম্ভবত একটি দুর্ভাগ্যজনক ভুল বোঝাবুঝি।’